বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯

পোস্ট #০৪২ : ওয়াচমেন এবার বাংলায় # প্রথম অধ্যায়_**বাম্পার পোস্ট**


ওয়াচমেন এবার বাংলায় eBong Comics ও চিত্রচোরের যৌথ পরিবেশনা


আজকের দিনেই দেব স্থপতি ও প্রকৌশলী বিশ্বকর্মার পূজিত হন।
সোজা কথায় আজ বিশ্বকর্মা পূজা। 
সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের পোস্ট শুরু করছি। 
জয় বাবা বিশ্বকর্মা।


 এই দিনের কিছু স্মৃতিকথাঃ

আজ আমাদের ঘুড়ি ওড়ানোর দিন। ছোটবেলায় এই নিয়ে প্রতিযোগিতা হতো, কে কার ঘুড়ি কাটতে
পারে, যদিও আমার কখনো সে সৌভাগ্য হয়নি, একবার আমাদের বাড়ির ছাদে একটা কাটা ঘুড়ি উড়ে
এসে পড়েছিল- সেই দেখে উৎসাহের সাথে লাটাই কিনে এনেছিলুম, তারপর সুতো কিনে নিয়ে এসে সেটা ওড়ানোর জন্য কি চেষ্টাটাই না করেছিলাম তার ইয়ত্তা নেই, তবে দমকা হাওয়ার সে ঘুড়ি আমার
উচ্চতার বেশি ওড়ার সাহস পায়নি, তারপর শেষ চেষ্টা করেছিলাম সেবার বিশ্বকর্মা পুজার দিন, কিন্তু হয়তো আমারই কোনও অপরাধে সেদিন বৃষ্টিতে সবকিছু মাটি হয়ে গিয়েছিল। সেটাই শেষ তারপর আর ঘুড়ি ওড়ানোর সাধ জাগেনি, সেই লাটাই আর ঘুড়ি আমাদের প্রতিবেশীর এক ছোট ভাইকে দিয়ে
দিয়েছিলাম, বলা বাহুল্য তার হাতে কিন্তু সে ঘুড়ি দিব্যি উড়েছিল। যাইহোক আজকে এসব হাবিজাবি কথা বলে আপনাদের আর সময় নষ্ট করবো না, সিধে আসল প্রসঙ্গে চলে আসি।

বাংলায় অনুবাদ প্রসঙ্গেঃ 


আজ আপনাদের সাথে আমার পছন্দের এক কমিক্স অনুবাদের কাজ ভাগ করে নেব। অনেকে বলেন তাদের নাকি আমার অনুবাদ ভালো লাগে (আদৌ লাগে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় আছে) কিন্তু আমার নিজেরই নিজের অনুবাদ তেমন যুতসই লাগে না, যদিও টুকটাক গ্রাফিক্সের কাজ জানি বলে ব্যাপারটা চাকচিক্যেই উতরে যায়। আমার যাদের অনুবাদ ভালো লাগে তাদের মধ্যে আছেন (সিনিয়ারদের মধ্যে) ইন্দ্রনীল'দা, কুন্তল'দা, শুভাগত'দা, রঞ্জন'দা ও সমবয়সী অনুবাদকদের মধ্যে দেবাশিষ ও পার্থ অরন্যদেব। দেবাশিষের সাথে কাজ করার বহু ইচ্ছে ছিল, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে সেটারও বাস্তবায়ন হচ্ছে।

আজকে আপনারা পড়তে চলেছেন দেবাশিষের অনুবাদে অ্যালান মুরের ওয়াচমেন। শুধু নামটাই যথেষ্ট। আর কিছু বলার প্রয়োজন হবে বলে মনে হয় না তাই আজকে আরও একটা ছোট গল্প বলেই শেষ করি। 


লেখক ও চিত্রশিল্পীর জুটি অ্যালান মুর ও ডেভ গিবন্স (ডানদিক থেকে)

কমিক্স পাগল (অনুবাদকদের) হিসেবে সেরা কমিক্স বা গ্রাফিক নভেল যেটাই পড়ি সেটাই বাংলায় অনুবাদ করে ফেলতে ইচ্ছে হয় (পাগলের প্রলাপ), কিছু ক্ষেত্রে বুঝতে পারি সবকিছু হয়তো একজীবনে করা সম্ভব নয়।

কীভাবে শুরু হল, বাংলায় ওয়াচমেনের পরিকল্পনাঃ-

প্রসঙ্গত বলে রাখি দেবাশীষ অ্যালান মুরের চরম ভক্তের অন্যতম। আমিও তাই, তবে মিলারের দিকের পাল্লাটা একটু ভারী আমার কাছে। এই নিয়ে একদিন দেবাশিষের সাথে (যত)সামান্য তর্কও হয়েছে। 

     যেটা বলতে গিয়ে এতো কথা বলা সেই রহস্যটাও এবার ফাঁস করে দিচ্ছি... চিত্রচোরের পথ চলা শুরু হয়েছিল যে বিশ্ববিখ্যাত কমিক্স দিয়ে সেটা হল ব্যাটম্যানের খুনে কৌতুক থুড়ি দ্য কিলিং জোক (সেটিও অ্যালেন মুরের লেখা ও ব্রায়ান বোল্যান্ড চিত্রিত) অধমের ক্ষত-বিক্ষত বঙ্গানুবাদ এর ব্যর্থ প্রচেষ্টার একটি নিদর্শন সেটি (জোকারের লুনি সং অর্থাৎ গর্ডনের সাথে নির্যাতনের অংশটিতে জোকারের গাওয়া গানটি লক্ষণীয়)। সেটি আমার চেয়ে দেবাশীষ করলেই হয়ত যথাযথ হত, সেটা না করতে পারার একটা ছোট আক্ষেপও আছে ওঁর।




কলেজ স্ট্রীটে একদিন সাক্ষাতের পর "নতুন কি করা যায়" এই কথা প্রসঙ্গে স্বভাবতই ওয়াচমেনের প্রসঙ্গ ওঠে। এটার অনুবাদ আমার করার প্রবল ইচ্ছে থাকলেও আমি অনুবাদ করলে আমার দাঁত তো দূর কম্পিউটার শুদ্ধু ক্রাশ হয়ে যেত, এতোটাই সিরিয়াস ও জটিল এর রচনা শৈলী, তাই আমি আমার দায়িত্ব এড়ানোর নিপুণ দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আমি এটার অনুবাদের দায়িত্ব ওঁর কাধে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত বোধ করি (সাথে সামান্য আক্ষেপও, মানে ঐ মনের কোনায় যেটুকু কাঁটা বিঁধার মতো মনে হয়- "ইশ্‌ আমার আর করা হল না")। প্রথম অধ্যায় শেষ হওয়ার পরে তো সিদ্ধান্তটা একদম সঠিক ছিল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ থাকে না এবং ভেতরের অন্তরদ্বন্দ্বটাও কেটে যায়। 

নিজের কাছে সৎ থেকেই বলছি, এটা এক কথায় অসাধারণ কাজ করেছে, দেবাশীষ, এর থেকে ভালো কাজ বাংলায় করা সম্ভব ছিল না। 

সেই সাথে যার কথা না বললেই নয়, তিনি ইন্দ্রনীল'দা। আমাদের মাথায় ওনার হাত (পড়ুন আশীর্বাদ) থাকার জন্যই আমরা একটা টিম হিসেবে বিশ্বের বিখ্যাত সব কমিক্স ও গ্রাফিক নভেল বাংলা ভাষায় আপনাদের হাতে তুলে দিতে পারছি। উনি এককথায় আমাদের ফ্রেন্ড, ফিলোজফার এন্ড গাইড।

এই গ্রাফিক নভেলটির মূল সংস্করণটি দেবাশীষের ব্লগ eBong Comics এ আপনি পেয়ে যাবেন, সেখান থেকেই এই কমিক্সের ব্যাপারে ও স্রষ্টা অ্যালান মুরের ব্যাপারেও অনেক কিছু জানতে পারবেন। সেই সাথে cbr প্রেমিরাও ওখানে তাদের পছন্দের cbr ফাইল পেয়ে যাবেন। 

এটা আসলে এবং কমিক্স ও চিত্রচোরের যৌথ পরিবেশনা। 

চিত্রচোর সংস্করণ এর জন্য নিচে ক্লিক করুন।


বিঃদ্রঃ মূল কমিক্সের  অনুবাদকের পাতা ও শেষের "মুখোশের আড়ালে" নিবন্ধটি, কমিক্সটি সম্পূর্ণরুপে বোঝার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।


বি. দ্র. : এটি একটি অ্যাডাল্ট কমিক্স। এরকম মাপের একটি সাইকোলজিক্যাল, এরোটিক, ক্রাইম থ্রিলার গল্পের গভীরতা বোঝার জন্য পুরোপুরি পরিণত মস্তিষ্কের পাঠকের প্রয়োজন। এতে বেশিরভাগ উপাদান বড়দের জন্যই সৃষ্ট। গল্পটির সাইকোলজি বাচ্চাদের (বড়দের তো অবশ্যই) মনে গভীরভাবে রেখাপাত করতে বাধ্য, এছাড়াও এতে অতিরিক্ত মাত্রায় নগ্নতা, অশ্লীল গালাগাল ও নৃশংসতা দেখানো হয়েছে যা কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। তাই ১৮ বছরের কম বয়স্ক পাঠকদের এটি পড়তে নিষেধ করা হলো

অনুবাদ কেমন হচ্ছে জানাতে ভুলবেন না যেন। মনে রাখবেন আপনাদের উৎসাহই আমাদের এগিয়ে চলার প্রেরণা। 

এই অনুবাদের সমস্ত কৃতিত্ব ও প্রশংসা দেবাশীষের প্রাপ্য তাই, পরের পর্ব কবে আসবে সেই নিয়ে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর তার কাছেই পাবেন। অনেক ধন্যবাদ। কমিক্স পড়ুন ও পড়ান।



বাংলা সংস্করণের পরিকল্পনা,  অনুবাদ ও বর্ণ সংস্থাপন ও সম্পাদনাঃ দেবাশীষ কর্মকার
শব্দ, বর্ণ ও বাক্য সংশোধন : ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল
প্রচ্ছদপট রূপায়ন ও চিত্রচোর সংস্করণের সম্পাদনা: রূপক ঘোষ


                             অনিবার্য কারণবশত বোন ভাইয়েরা পরের মাসে আবার ফিরবেন। 



শনিবার, আগস্ট ৩১, ২০১৯

পোস্ট #০৪১ : বোনেরা আবার বাংলায়... #পঞ্চম পর্ব


বোন | পঞ্চম অধ্যায় : ব্যারেলহ্যাভেন


পঞ্চম ইস্যুর ইংরেজি প্রচ্ছদ

বোনের প্রথম ছ’টা ইস্যু নিয়ে বোনেদের প্রথম বই “আউট ফ্রম বোনভিল” বা আমাদের অনুবাদে “বোনভিল থেকে পালিয়ে” বইটির থুড়ি কমিক্স অ্যালবামটির পঞ্চম পর্ব আজকেই পড়া যাবে। আর হাতে বাকি থাকছে মাত্র একটি পর্ব, যা ইন্দ্রনীল’দার অনুবাদে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ পাবে আগামী মাসে। ততদিন ধৈর্য ধরে থাকতেই হবে। অনেকেই বোন কেমন লাগছে, তা আমাদের জানিয়েছেন, যারা এখনো জানাননি অবিলম্বে কমেন্টে বা মেইলে জানান।

পঞ্চম ইস্যুর বাংলা সংস্করণের প্রচ্ছদ

আজকেও আমরা বোন ভাইয়েদের নিয়ে তেমন কিছু আলোচনা করব না, বরং আজকে একটা বিশেষ জিনিসের ওপরে আলোকপাত করতে চাই, যেটা ছাড়া কমিক্স অনেকটাই অসম্পূর্ণ থেকে যেত।

ওনোম্যাটোপোইয়া কি? ইহা খায় না মাথায় দেয়?


কমিক্‌স যেহেতু শুধুই পড়ার নয়, দেখারও বস্তু, তাই যেসব শব্দ শুধুমাত্র শ্রুতিগ্রাহ্য, সেইসব ‘ওফ্‌ফ্‌’, ‘ধড়াম্‌’, ‘টুংটাং’ ‘আপ্লুস’ ইত্যাদি, ইত্যাদি এবং আরো ইত্যাদিদের ছবিতে গল্পের পাতায় ‘ওনোম্যাটোপোইয়া’ (মতান্তরে ‘ওনোম্যাটোপিয়া’)-র সাহায্যে ঠাঁই দিতে হয়। তখন কমিক্‌সের যে খোলতাই রূপ হয় সে যাঁরা বেতালের বন্দুক থেকে ‘গুড়ুম’ ‘গুড়ুম’ করে গুলি বেরোতে দেখেছেন তাঁরাই জানেন! ‘ওনোম্যাটোপোইয়া’ আদতে গ্রীক শব্দ, যার আভিধানিক অর্থ হলো গিয়ে SOUND বা ধ্বনির শব্দরূপ। কমিক্‌সের কারিগরদের ক্যাটেগরিতে যাঁরা লেটারারের দায়িত্ব পালন করেন তাঁরাই বিভিন্ন শেপ ও ফন্ট ব্যবহার করে ‘ওনোম্যাটোপোইয়া’ তৈরি করে কমিক্‌সের গল্পে জায়গামতো বসিয়ে দেন। বিদেশী ভাষা থেকে বাংলায় কমিক্‌স অনুবাদ করার সময় এই ওনোম্যাটোপোইয়াগুলিরও যথাযথ বাংলা করতে হয় বৈকি। এই দেখুন না, আপনারা যে এবার বোনের পঞ্চম অধ্যায় ‘ব্যারেলহ্যাভেন’ বাংলায় পড়বেন তার ওনোম্যাটোপোইয়াগুলো সাধ্যমত পেশাদারি দক্ষতা সহযোগে প্রস্তুত করতে গিয়ে মাথার ঘামে পা পিছলে পড়ার দশা হয়েছিল প্রায়। কিভাবে এই কাজ করতে হয়েছে তারই কিছু নমুনা দেওয়া হলো আপনাদের জন্য।







আশা করি এক মাসে কেন বোনের একটা অধ্যায়ই অনুবাদ করা সম্ভব হচ্ছে আমাদের, সেকথা আপনাদের কাছে এবার জলবৎ তরলং হয়ে যাবে। আর হ্যাঁ, আমাদের কাজ ভালো লাগলে আপনারা আমাদের প্রিয় ওনোম্যাটোপোইয়াগুলোকে কমেন্টবক্সে উজাড় করে দিতে ভুলবেন না যেন... যেমন ধরুন, ‘ওয়াও’, ‘কেয়াবাৎ’, ‘সাবাশ’... এই আর কি!

এবারে বোনের পর্ব পড়ে ফেলুন।


গত এক পর্বে ডাউনলোড অপশন তুলে দেওয়ায় অনেকে আক্ষেপ করেছিলেন, তাদের কথা মাথায় রেখেই আবার ডাউনলোড অপশন চালু করা হলো। কমিক্সটি পড়ার পর আপনার মতামত একান্ত কাম্য।

অনুবাদ : ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল
প্রচ্ছদপট রূপান্তর ও বর্ণ সংস্থাপন : রূপক ঘোষ

আগামী পর্বে বোনেরা ফের ফিরবেন।

শনিবার, জুলাই ২৭, ২০১৯

পোস্ট #০৪০ : বোনেরা আবার বাংলায়... #চতুর্থ পর্ব_স্পেশাল পোস্ট


বোন | চতুর্থ অধ্যায় : হুংকার!


গত পর্বে আপনারা পড়েছিলেন রিপ কার্বি, যেটার মাধ্যমেই শুরু হয়েছিল আমাদের নতুন প্রজেক্ট “প্রজেক্ট : পুনরুদ্ধার”। সেটা সবে শুরু। মাঝেমধ্যে এই প্রজেক্টের অন্তর্গত বিভিন্ন পুরনো নিউজ পেপার কমিক্স স্ট্রিপকে পুনরুদ্ধার করে আপনাদের মাঝে নিয়ে আসব।

গত তিন পর্ব ধরে চলছিল জেফ স্মিথের বোন। মধ্যান্তরের বিরতির পর আবার আজ থেকে শুরু হলো...


বোন বাংলা ৪ নং ইস্যুর প্রচ্ছদ
বোন ইংরেজি ৪ নং ইস্যুর প্রচ্ছদ

এবার বোনেদের কথায় আসা যাক, বোনের প্রথম ছ’টা ইস্যু নিয়ে বোনেদের প্রথম বই “আউট ফ্রম বোনভিল” বা আমাদের অনুবাদে “বোনভিল থেকে পালিয়ে” বইটির থুড়ি কমিক্স অ্যালবামটির চতুর্থ পর্ব আজকেই পড়া যাবে। আর মাত্র হাতে বাকি থাকছে দুটি পর্ব, যা ইন্দ্রনীল’দার অনুবাদে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ পাবে আগামী দুই মাস (অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর) যাবত। ততদিন ধৈর্য ধরে থাকতেই হবে। অনেকেই বোন কেমন লাগছে, তা আমাদের জানিয়েছেন, যারা এখনো জানাননি অবিলম্বে কমেন্টে বা মেইলে জানান।

আজকে আর বোন নিয়ে নয়, তার পরিবর্তে এক অনেক দিনের পুরনো ব্লগার ও “বিশেষ বন্ধুর” -- “বিশেষ প্রশ্নের” উত্তর দিতে চাই। যদিও প্রশ্ন একটাই ছিল, তবুও আমি আরও নয়খানা প্রশ্ন নিজের মতো সাজিয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করছি (কারণ আর কেউ কোনও প্রশ্ন করেন না)।


আমার আগে এই বিষয়ে ব্লগার বন্ধু ও সহযোদ্ধা দেবাশিষ তার ব্লগ "এবং কমিক্স" এ এই ব্যাপার নিয়ে একটি পোস্ট করেছিল, সেই ট্রেন্ডকেই ফলো করছি, #Followingthetrend। এরপর আমি চাই পার্থ অরণ্যদেব আর মিস্টার ওয়াকার দুজনেই তাদের ব্লগে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে কোনও একটা পোস্টে আলোকপাত করুক। সেইদিনের অপেক্ষায় থাকব। এবার পড়তে থাকুন, ধন্যবাদ।

০১। আপনি কেন ব্লগিং করেন?

উঃ ঘরের খেয়ে বোনের মোষ তাড়াতে ভালো লাগে তাই (উত্তরটা ভালো না লাগলে পরের লাইন পড়ুন)। সোজাকথায় বলি, আমি অতিমাত্রায় কমিক্স পাগল ছেলে। খাওয়া, ঘুম, কাজ, কমিক্স আর সিনেমা এই নিয়েই আমার জীবন। একদম সহজ সরল ব্যাপার। কলেজে পড়ার সময় বেশ কিছু বিশেষ বাংলা কমিক্স ব্লগের সন্ধান পাই। সেখানেই আবার ইন্দ্রজালের বিপুল সম্ভার ও অন্যান্য বাংলা কমিক্স ডিজিটাল ভার্সন পেয়ে আউলে গেছিলাম। কমিক্স তখনো অনুবাদ করতাম। একদিন হার্ডডিস্ক উড়ে গেল, আমার প্রথম দিকের বেশ কিছু অনুবাদ জলাঞ্জলি দিতে হলো। তারপর আবার কাজ শুরু করেছিলাম কিন্তু সেগুলো সবটাই নিজের জন্য, এই বিভিন্ন ব্লগ ফলো করার কারণে মাথায় হঠাৎ একটা শুভ বুদ্ধির (পড়ুন দুর্বুদ্ধি) উদয় হয়। কিন্তু তার আগে তো আরও কন্টেন্ট দরকার, সেই নিয়ে আরও গাদাখানেক সময় নষ্ট করে বেশকিছু কন্টেন্ট অনুবাদ করে ফেলি। সেগুলোর আর্কাইভ করে রাখার জন্য মূলত এই ব্লগের সৃষ্টি।

০২। ঠিক কবে থেকে অনুবাদ করছেন? কি কি সফটওয়্যার ইউজ করেন?

উঃ ছোট থেকেই আমি কমিক্স পড়তে ভালোবাসতাম, এখনো পড়ি। ছোটবেলার থেকেই গথাম কমিক্সের ইংরেজি কমিক্সগুলোর স্পিচ্‌ বাবল গুলোতে কাগজ কেটে কেটে আঠা মেরে হাতে বাংলায় লিখে রাখতাম, সেই থেকে শুরু। পরে ঘরে কম্পিউটার আসার পর সেই কাজটাই পেইন্ট এবং বাংলা ওয়ার্ড দিয়ে করতে শুরু করি। সেই থেকে আসতে আসতে বহু বিবর্তন হতে হতে আজ, শুধু ফটোশপে এসে ঠেকেছে সাথে বাংলা লেখার জন্য অভ্র কিবোর্ড তো আছেই। শুরু করেছিলাম সম্ভবত ২০০৭-২০০৮, কিন্তু সেগুলো পাতে দেওয়ার মতো ছিল না।

০৩। ব্লগ কবে খুলেছেন? আগে থেকে কে কে জানত, পাশে ছিল?

উঃ খুবই অমূলক প্রশ্ন। যেকোনো বুদ্ধিমান পাঠক ঠিক খুঁজে বের করতে পারবেন এর উত্তর। তবুও বলছি, আমি তখন মুম্বাইতে সবে কাজে জয়েন করেছি। তখন অলরেডি ব্লগের কন্টেন্ট রেডি করছি, আর ভাবছি, আজ খুলব না কাল খুলব? এইসব ছাইপাঁশ ভাবতে ভাবতে ১৪২৩ এর বর্ষবরণের দিন (পয়লা বৈশাখ) অর্থাৎ ২০১৬ সালের ১৪ই এপ্রিল অবশেষে আমাদের পথ চলা শুরু হয়।

শুরুর আগে কয়েকজন ব্লগের ব্যাপারটা জানতেন, যেমন রুস্তম’দা, ইন্দ্রনাথ’দা, স্বাগত আর পার্থ অরণ্যদেব। আর কেউ জানত কিনা খেয়াল নেই। আর জানতেন আমার মা, বাবা ও মেসের কিছু বন্ধুরা।

০৪। “চিত্রচোর” ব্লগের এইরকম নাম দিলেন কেন?

উঃ একই প্রশ্নের উত্তর বারবার দিয়ে মাথাখারাপ করতে চাই না, এমনিও বেশি বড় লেখা হলে কিছু পাঠক আঁতকে ওঠেন, তাই জানার খুব ইচ্ছা হলে নিচের অংশটা পড়ে দেখতে পারেন।

শুভ সূচনা


০৫। আগে অনেক বেশি পোস্ট হত, এখন পোস্টের সংখ্যা দিনদিন কমছে কেন?

উঃ এই অভিযোগটা আগেও অনেকেই করেছেন, আমিও তো অভিযোগ করি, কমেন্ট না পেলে ব্লগ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেই, কিন্তু সবাই কি কমেন্ট করেন?

যাই হোক, প্রশ্নের উত্তরটা হলো এখন অনেক আলসে হয়ে গেছি। আগে সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অফিস করে, বন্ধুদের রান্নাবান্নায় হেল্প করে খাওয়া দাওয়া করে, রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত অনুবাদ করতাম (রোববার ছুটির দিনে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে না গিয়ে)। তাই অনেকগুলো পোস্ট হত, আর এখন অন্য বেশ কিছু কাজের পাশাপাশি রুটিনটা বেশ কিছুটা বদলেছে। আর আমার বিশ্বাস এখন আগের থেকে অনুবাদ ও প্রেজেন্টেশনের মানও বেশ কিছুটা বদলেছে, তবে সেটা ঠিক কিনা পাঠকরাই ভালো বলতে পারবেন।

তাছাড়াও এটা তো অনুবাদ ব্লগ, এখানে শুধু স্ক্যান করে কিছু ছাড়া হয় না, বা এখনো পর্যন্ত ছাড়া হয়নি যে কম সময়ে কিছু দিতে পারব, তাই ভালো অনুবাদ পেতে গেলে সেটা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। এছাড়া আর কি করার আছে, আপনারাই বলুন।

০৬। কমেন্ট নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করেন কেন? এটা কি একটু বেশি পাগলামি নয়? আপনি তো নিজেই ব্লগ খুলেছেন, কেউ তো আপনাকে জোর করেনি, তাই পাঠককে কমেন্ট নিয়ে অযথা বারবার বিরক্ত করার কি আছে?

উঃ বিনামূল্যে পাঠকেরা নিজের মাতৃভাষায় কমিক্স পড়তে পারছেন, আমাদের কাজ কেমন হচ্ছে, সেটা জানানো তো অবশ্যই পাঠকদের কর্তব্য। কোনও সিরিজ ভালো লাগছে বা মন্দ লাগছে বা আগের কোনও কমিক্স কেমন লেগেছে, বা সেই ধরনের আরও কিছু কমিক্স পড়ার ইচ্ছে থাকলে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্টে জানানো উচিৎ। মনে রাখবেন, পাঠকদের উৎসাহ না থাকলে আমাদের কাজ করার ইচ্ছেটা কিন্তু কমতে থাকে। তাই আমাদের পোস্ট কেমন লাগছে, কোথায় কি খামতি আছে, কিভাবে আরও ভালো করা যায়, অথবা অন্য কোনও সাজেশন থাকলে নির্দ্বিধায় কমেন্টে জানানো উচিৎ। শুধু আমার ব্লগেই নয়, অন্য কোনও ব্লগ থেকে ফাইল নামালেও একই কাজ করা উচিৎ। কিন্তু তার পরিবর্তে শুধু ডাউনলোডই হয়ে যায়। যদি একটা ফাইল ১০০+ ডাউনলোড হয়, তবে অন্তত ২০-২৫ জনের তো জানানো উচিৎ, তাই না? কিন্তু চিত্রচোরের পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের সবচেয়ে বেশি যে কমিক্সটি পাঠকেরা পড়েছেন (অ্যাসটেরিক্স ও হারানো পাণ্ডুলিপি) সেটার ডাউনলোড সংখ্যা ৯৫০+ কিন্তু পোস্টে কমেন্ট সংখ্যা সর্বসাকুল্যে ১৩ টি। এটা কি ঠিক? আপনারাই বলুন...

তবে কৃতজ্ঞতামূলক কমেন্ট (দারুণ হচ্ছে, চালিয়ে যান, ইত্যাদি) এর চেয়ে আমার গঠনমূলক কমেন্ট (এই জায়গায় ভুল আছে, এভাবেও করা যেত, বা পরে এইভাবে চেষ্টা করো, ইত্যাদি) বেশি পছন্দের।

০৭। ডাউনলোড এর সংখ্যা এত বেশি আর কমেন্ট এতো কম এর কারণ কি হতে পারে? আর গত একটা পোস্ট থেকে আমরা জেনেছি যে, বহু কন্টেন্ট চুরি হচ্ছে, এটার ব্যাপারে কি বলতে চান?

উঃ হ্যাঁ, আসলে হয়কি, অনেকে ব্লগের পোস্ট শেয়ার না করে শুধু ডাউনলোড লিঙ্ক বা ব্লগ থেকে ডাউনলোড করে নিজের ড্রাইভ থেকে মিরর করে শেয়ার করেন। এতে করে ডাউনলোড সংখ্যা বেড়ে যায়, কিন্তু ওয়াটারমার্ক থাকলেও অনেকেই সঠিক ব্লগের হদিস পান না, তাই এই অবস্থা হয়েছে।

বেশ কয়েকমাস যাবত দেখছি, অনেকেই চিত্রচোর সহ গুটিকয়েক অন্যান্য বাংলা অনুবাদ ও পুরানো দুষ্প্রাপ্য কমিক্স ব্লগ থেকে বিভিন্ন কন্টেন্ট “শুধুমাত্র এক স্থানে একত্রিত করার উদ্দেশ্যে” অবাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন স্থানে আমাদের না জানিয়েই শেয়ার করছেন, তার মধ্যে একাংশ আবার বিভিন্ন এড প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের কন্টেন্ট ডাউনলোড করে অন্য ড্রাইভ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা লিঙ্ক থেকে শেয়ার করছেন। অনেকে অজ্ঞতাবশত কাজটি করেছিলেন এবং পরবর্তীতে সেটি শুধরেও নেন, তাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু বাকি বেশ কিছু ব্লগের ব্লগারদের এ বিষয়ে মেইল করলেও কোনও প্রত্যুত্তর আসেনি (যদিও ব্লগে লেখা ছিল, কোনও কন্টেন্ট মোছার প্রয়োজন হলে মেইলে জানাতে)। এটি একটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা বলে মনে করি। আমার মতে, শুধু কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপনটুকুই সব নয়, তাই ভবিষ্যতে কেউ যদি চিত্রচোরের কোনও কমিক্স শেয়ার করতে চান, সেটা আমাদের জানিয়ে, পোস্টের মূল লিঙ্কটি শেয়ার করুন, কোনও অন্য লিঙ্ক বা শুধু ডাউনলোড লিঙ্ক শেয়ার করাটা অনুচিত। আশা করি, চিত্রচোরের বাকি পাঠকেরাও এই ধরনের কোনও পোস্ট অন্য কোনও স্থানে দেখে থাকলে আমাদের জানাবেন ও সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন ও এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবেন এটাই আশা করব। এই একই কারণে আগেও অনেকগুলি ব্লগ বন্ধ হয়ে গেছে, আমাদের সেরকম করুণ পরিণতি হোক, সেটা না চাইলে এই ঘটনাটা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিৎ।

০৮। এই ব্লগ কখনো বাণিজ্যিক করার কথা ভাবেননি কেন?

উঃ ভাবিনি সেটা ঠিক নয়। এতটা পরিশ্রম যখন আমরা সবাই মিলে করছি, তার প্রতিদান হিসেবে কিছু আশা করাটা কোনো গর্হিত কাজ নয়, তবে আমরা যে সমস্ত কমিক্স অনুবাদ করি, সেগুলোর কপিরাইট আমাদের নেই। ইউরোপিয়ান কমিক্স, জাপানিজ মাঙ্গা কমিক্স ইত্যাদি বহু কাজ ইংরেজিতে অবাণিজ্যিকভাবে অনুবাদ হয়েছে, সেগুলিকে “স্ক্যান্সেশান” (স্ক্যান+ট্রান্সলেশান) বলা হয়। তেমনি বিদেশের কমিক্স বা কমিক্স সিরিজগুলোকে নিজের মাতৃভাষায় আরও বেশি জনপ্রিয় (ও ভালো লাগলে) আসল কমিক্সটি কেনার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো ও বিশেষত সেই অসামান্য কমিক্সগুলির সম্মানার্থে চিত্রচোর নিষ্ঠার সাথে অবাণিজ্যিকভাবে কাজ করে চলেছে, তবুও আপনি কিছু সাহায্য করতে চাইলে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য কমিক্স স্ক্যান করে আমাদের দিতে পারেন অথবা নতুন কোনও কমিক্স অনুবাদ করে আমাদের দিতে পারেন, সেই বিষয়ে কথা বলতে ও বিস্তারিত জানতে আমাদের মেইল করুন।

ঠিকানা ও এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য এখানে পাবেন-

০৯। একেকটা অনুবাদ রূপান্তর করতে কি রকম সময় লাগে? অন্য কেউ কি আপনাদের হয়ে অনুবাদ করতে পারেন?

উঃ সেটা পুরোপুরি নির্ভর করে গল্প বা কমিক্স সিরিজটি কত বড় তার ওপরে। তবুও একটা কমিকসকে আদ্য-পান্ত বাংলায় রূপান্তর করতে গেলে অনুবাদের পাশাপাশি ছবিগুলোর ওপরের গ্রাফিক্স (Onomatopoeia) মুছে আবার বেশ কিছু রূপান্তর করতে হয়, সেটা আরও বেশি সময়সাপেক্ষ কাজ। গড়ে একটা ছোট কমিক্স অনুবাদ করতে যদি সপ্তাহ তিনেক সময় লাগে, আর দিনে যদি চার ঘণ্টা এর পেছনে ব্যয় করা হয় তবে সর্বমোট সময় দাঁড়াচ্ছে চুরাশি ঘণ্টা, কম বেশি করে ধরে নিলাম একটা সাধারণ কমিক্সের বাংলা সংস্করণ করতে সময় লাগছে সত্তর ঘণ্টা। তারপরে সেটার প্রুফ রিড এবং সম্পাদকের সময় এবং সেটির ভুলত্রুটি শোধরানোর জন্যও বেশ কিছু সময় যাচ্ছে। প্রতিবারেই আমাদের এই অতি তুচ্ছ কাজটাকে বিনামূল্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শুধু পাঠকদের কাছে একটাই অনুরোধ থাকে, তাদের মূল্যবান সময়ের মিনিট দু’য়েক সময় খরচ করে, ভালো-মন্দ মতামত জানিয়ে এবং কমিকসের অনুবাদের মান কেমন হচ্ছে তা জানিয়ে আমাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা যোগানো— তাহলে এখনো বলবেন কমেন্ট জরুরি নয়?

আমাদের হয়ে কেউ নিঃসন্দেহে অনুবাদ করতেই পারেন, সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আমাদের মেইল করুন।

১০। চিত্রচোরের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কি? বা এর ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে? ভবিষ্যতে আর কি কি অনুবাদ পাওয়া যাবে, সেটা যদি জানান!

উঃ চিত্রচোরের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো এই ব্লগের পাঠকেরা ও তাদের ভালোবাসা। আসল জীবনে আমি একটা চরম ইন্ট্রোভার্ট ছেলে, লোকজনের সঙ্গে যেচে আলাপ করতে পারি না, নিজেকে গুটিয়ে রাখি, কিন্তু এই ব্লগের সূত্রেই আমার বেশ কিছু গুণী মানুষের সাথে আলাপ হয়েছে, এবং প্রথম দিকে একা কাজ করলেও এখন অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাই আমরা এখন টিম হিসেবে কাজ করি। ভবিষ্যতে হয়তো এরকম আরও অনেকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন, এবং আমরা আরও ভালো ভালো কমিক্স আপনাদের উপহার দিতে পারব। এছাড়াও অনেক খারাপ মুহূর্তে বেশকিছু মূল্যবান মতামত ও উপদেশ (যেগুলো আমার কাছে মধুর স্মৃতির মতো, এবং অর্থের থেকেও বেশি মূল্যবান) নিজের দুঃখ ভুলে নিজের জীবনের পাশাপাশি এই কাজটাকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

এই বিষয়ে আরও কিছু জানার ইচ্ছে থাকলে জানাবেন, ভবিষ্যতে আমাদের টিম ও বন্ধুদের নিয়েও আলোচনা করা যেতেই পারে।

আর কি কি অনুবাদ ভবিষ্যতে পাবেন এটা বললেই চাপ খেয়ে যেতে পারি যে, “অমুক” অনুবাদ কবে পাব বা “তমুক” অনুবাদ পাচ্ছি না কেন, ইত্যাদি, আর সেটা বলে দিলে আমার পছন্দের বিষয় আপনাদের “চমক” দেওয়ার মজাটা হারিয়ে যাবে, তাই সেটা নাহয় আপাতত মুলতুবী রাখা থাক।

** ওপরের প্রশ্ন ও উত্তরগুলি কিছুক্ষেত্রে ইচ্ছে করেই ব্যাঙ্গাত্মকভাবে লেখা হয়েছে।

যাক, আজকে অনেকটা নিজের ঢাক পিটিয়ে নিলাম। যদিও সেই অর্থে এটাই প্রথম এই ধরনের “পার্সোনাল” কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম যেটা আগে করা হয়নি। ভালো লাগলে বা পাঠকেরা চাইলে অনুবাদের পদ্ধতি নিয়ে বা “আমাদের টিম” নিয়ে অনেক কিছু বলার আছে। আজকে এখানেই শেষ করছি। এবারে বোনের চতুর্থ পর্ব পড়ে ফেলুন।


গত এক পর্বে ডাউনলোড অপশন তুলে দেওয়ায় অনেকে আক্ষেপ করেছিলেন, তাদের কথা মাথায় রেখেই আবার ডাউনলোড অপশন চালু করা হলো। কমিক্সটি পড়ার পর আপনার মতামত একান্ত কাম্য।

অনুবাদ : ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল
প্রচ্ছদপট রূপান্তর ও বর্ণ সংস্থাপন : রূপক ঘোষ

আগামী পর্বে বোনেরা ফের ফিরবেন।

শুক্রবার, জুলাই ০৫, ২০১৯

পোস্ট #০৩৯ : গোয়েন্দা রিপ_"প্রজেক্ট: পুনরুদ্ধার" #০১_স্পেশাল পোস্ট


গোয়েন্দা রিপ কার্বি

প্রথমেই সবাইকে রথযাত্রার শুভেচ্ছা জানাই। আজকে পোস্টটা করতে অনেক দেরি হয়ে গেল, আদৌ পোস্ট করার সুযোগ যে আজকে পাব, সেটা ভেবে উঠতে পারিনি। যাই হোক, আজকে একটু স্বাদবদল করার জন্য অন্য কমিক্স এনেছি, সেই অর্থে আজকে চিত্রচোরে এটা স্পেশাল পোস্ট।

হেডিং দেখে কি ভ্রুকুঞ্চিত হয়েছে? “প্রজেক্ট পুনরুদ্ধার” সেটা কি? - একটু পরেই উত্তর পাবেন।

আশা করি রিপ কার্বির সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না, যারা ইন্দ্রজাল কমিক্স পড়েছেন বা আনন্দবাজার পত্রিকায় কমিক্স স্ট্রিপগুলো পড়েন, তারা "গোয়েন্দা রিপ" সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই জানেন।

যারা জানেন না তাদের জন্য আরও একবার...

রিপ কার্বির নেপথ্যের তারকারা :


স্রষ্টা আলেক্স রেমন্ড

রিপ কার্বির স্রষ্টা আমেরিকান কার্টুনিস্ট অ্যালেক্স রেমন্ড, যিনি ১৯৩৪ সালে কিং ফিচারস্‌ সিন্ডিকেটের হয়ে “ফ্ল্যাশ গর্ডন” কমিক্স সৃষ্টি করে বিশ্ববিখ্যাত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তিনি আর তাঁর আগের করা কিছু কমিক্স চরিত্র (ফ্ল্যাশ গর্ডন, জঙ্গল জিম, সিক্রেট এজেন্ট X-9) নিয়ে কাজ না করে এক প্রাক্তন নৌ-সেনা রিপ কার্বির কাজ শুরু করেন। রিপ ২য় বিশ্বযুদ্ধ থেকে ফিরে প্রাইভেট ডিটেকটিভ হিসেবে কাজ করা শুরু করেন। মাঝেমাঝে তাঁকে কাজে সাহায্য করতেন তার বান্ধবী ফ্যাশন মডেল জুডিথ “হনি” ডোরিয়ান (রেমন্ডের নিজের দেওয়া ও তিন মেয়ের ডাকনাম থেকে এই নামের উৎপত্তি) আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রিপের পরিচারক ডেসমন্ড।

সেই সময়ে কিং ফিচার্সের সম্পাদক ওয়ার্ড গ্রিন রেমন্ডকে একটা “ডিটেকটিভ-টাইপের” গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টি করার পরামর্শ দেন, যেটা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৪৬ সালের ৪ঠা মার্চ, সিন্ডিকেট বিভিন্ন পেইন্ট করা প্রমোশনাল আর্টের মাধ্যমে ব্যাপক হারে রিপের প্রমোশন করেছিল। স্ট্রিপটি খুব সফল হয়েছিল, আর এর জন্য ১৯৪৯ সালে রেমন্ড রুবেন অ্যাওয়ার্ড পান।

ভাবশিষ্য জন প্রেন্টিস

রেমন্ডের এই স্ট্রিপে কাজ করার সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গল্পগুলো লিখতেন ওয়ার্ড গ্রিন আর গ্রিনের মৃত্যুর পর ফ্রেড ডিকেন্স‌ন। বেশ কিছু সিকোয়েন্স অবশ্য রেমন্ড নিজেই লিখেছিলেন। ১৯৫৬ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় রেমন্ডের মৃত্যু হয়। কিং ফিচার্সের তখন একজনকে রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন আর জন প্রেন্টিসকে পেয়ে যান। ডিকেন্সন আশির দশকের মাঝ বরাবর শারীরিক অসুস্থতার কারণে অবসর নিতে বাধ্য হন। প্রেন্টিস তারপর আঁকা-লেখা সব নিজেই সামলাতেন, তিনি ১৯৯৯ সালে নিজের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রিপকে নিয়ে কাজ করে গেছেন। ১৯৯৯ সালের ২৬ শে জুন রিপ নিজে অবসর নেন। এই স্ট্রিপে কাজ করার জন্য প্রেন্টিস ন্যাশেনাল কার্টুনিস্টস্‌ সোসাইটি স্টোরি কমিক স্ট্রিপ অ্যাওয়ার্ড পান ১৯৬৬, ১৯৬৭ আর ১৯৮৬ সালে।

তখনকার কে.এফ.এস. এর সম্পাদক ওয়ার্ড গ্রীন 
সহকারী শিল্পী আল উইলিয়ামসন
সহকারি শিল্পী গ্রে মরো

রিপ প্রায় পাঁচ দশক টানা চলেছিল, আর জন প্রেন্টিস একাই চল্লিশ বছরের ওপরে রিপ নিয়ে কাজ করেছিলেন। প্রকাশনার এত বছরে অনেক লেখক ও শিল্পীরা সহকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন, তাদের মধ্যে ফ্রাঙ্ক বয়েল (যিনি শেষ গল্পটি সমাপ্ত করেন), আল উইলিয়ামসন আর গ্রে মরো।

এবার আমরা জেনে নিই "প্রজেক্টঃপুনরুদ্ধার" কি?


না, ঘাবড়ে যাবার কিছু নেই, এটা তেমন আহামরি বা মারাত্মক কিছু নয়। বিভিন্ন খবরের কাগজে ছোট ছোট কমিক্স একেকটা স্ট্রিপ থাকে যা সোম-শুক্র বা রবিবার এইরকম বিভিন্ন দিনে খবরের কাগজে প্রকাশিত হয়। যেমন আনন্দবাজারে এখন পাওয়া যায় অরণ্যদেব ও ম্যানড্রেক, আজকালে “মাকড়সার দুর্দান্ত কীর্তি” নামে স্পাইডার-ম্যান, বর্তমান পত্রিকায় টারজান ইত্যাদি। একসময় আনন্দবাজারে রিপ কার্বি প্রকাশিত হত, অমৃত পত্রিকায় একসময়ে মডেস্টি ব্লেজ বা আজকালে একসময় জেমস বন্ডের নিউজপেপার স্ট্রিপগুলো প্রকাশিত হত, আন্তর্জালে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা কিছু স্ট্রিপ যেগুলোর মান খুবই খারাপ সেগুলোকে পুনরুদ্ধার করে নতুন প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করে রাখাটাই আমাদের মূল লক্ষ্য হবে। এক্ষেত্রে আপনিও আপনার কাছে পুরনো কিছু স্ট্রিপ থাকলে তা আমাদের সাথে শেয়ার করে আপনার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন। অনেক ব্লগার বন্ধুরা একসঙ্গে এটিতে অবদান রাখবেন, অনেকটা “ইন্দ্রজালের প্রত্যাবর্তন” এর মতো। এ বিষয়ে এবারের সংস্করণের ভেতরে অনুবাদকের পাতায় আরও কিছু তথ্য দেওয়া থাকল।

হ্যাঁ, সেই গোয়েন্দা রিপ আজ হাজির হয়েছেন, চিত্রচোরে।

ইন্দ্রজাল বা আনন্দবাজারে কখনো অ্যালেক্স রেমন্ডের করা রিপ প্রকাশিত হয়নি, যা হয়েছে সব জন প্রেন্টিসের গল্পগুলো, তাই আজ বাংলায় প্রথমবার গোয়েন্দা রিপের প্রথম অনুসন্ধান “দ্য চিপ ফ্যারাডে মার্ডার” এর বঙ্গানুবাদ “দরজার সামনে খুন” শুধুমাত্র চিত্রচোরে।

রিপের প্রথম অনুসন্ধানের কাহিনি পড়তে নিচের ছবিতে ক্লিক করুন।

গত এক পর্বে ডাউনলোড অপশন তুলে দেওয়ায় অনেকে আক্ষেপ করেছিলেন, তাদের কথা মাথায় রেখেই আবার ডাউনলোড অপশন চালু করা হলো। কমিক্সটি পড়ার পর আপনার মতামত একান্ত কাম্য।

সম্পাদনা ও নামকরণ : ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল
প্রুফ সংশোধন : মোঃ আশিকুর রহমান
প্রচ্ছদপট রূপান্তর ও বর্ণ সংস্থাপন ও এডিট : রূপক ঘোষ

আগামী পর্বে বোনেরা ফের ফিরবেন...

শুক্রবার, জুন ১৪, ২০১৯

পোস্ট #০৩৮ : বোনেরা আবার বাংলায়... #তৃতীয় পর্ব


*** শুরুর আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা ***

বেশ কয়েকমাস যাবত দেখছি, অনেকেই চিত্রচোর সহ গুটিকয়েক অন্যান্য বাংলা অনুবাদ ও পুরানো দুষ্প্রাপ্য কমিক্স ব্লগ থেকে বিভিন্ন কন্টেন্ট “শুধুমাত্র এক স্থানে একত্রিত করার উদ্দেশ্যে” অবাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন স্থানে আমাদের না জানিয়েই শেয়ার করছেন, তার মধ্যে একাংশ আবার বিভিন্ন এড প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের কন্টেন্ট ডাউনলোড করে অন্য ড্রাইভ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা লিঙ্ক থেকে শেয়ার করছেন। অনেকে অজ্ঞতাবশত কাজটি করেছিলেন এবং পরবর্তীতে সেটি শুধরেও নেন, তাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু বাকি বেশ কিছু ব্লগের ব্লগারদের এ বিষয়ে মেইল করলেও কোনও প্রত্যুত্তর আসেনি (যদিও ব্লগে লেখা ছিল, কোনও কন্টেন্ট মোছার প্রয়োজন হলে মেইলে জানাতে)। এটি একটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা বলে মনে করি। আমার মতে, শুধু কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপনটুকুই সব নয়, তাই ভবিষ্যতে কেউ যদি চিত্রচোরের কোনও কমিক্স শেয়ার করতে চান, সেটা আমাদের জানিয়ে, পোস্টের মূল লিঙ্কটি শেয়ার করুন, কোনও অন্য লিঙ্ক বা শুধু ডাউনলোড লিঙ্ক শেয়ার করাটা অনুচিত। আশা করি, চিত্রচোরের বাকি পাঠকেরাও এই ধরনের কোনও পোস্ট অন্য কোনও স্থানে দেখে থাকলে আমাদের জানাবেন ও সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন, নাহলে হয়তো অতীতে বাংলার বিখ্যাত কিছু ব্লগারদের মতোই আমরাও চিত্রচোর ব্লগটিকে চিরতরে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব। অনেক ধন্যবাদ।

গত দুই পর্ব ধরে চলছে জেফ স্মিথের বোন


এই কমিক্সটি অনুবাদ করছেন আমাদের সবার প্রিয় ইন্দ্রনীল’দা। অনেকে নতুন এই মজার কমিক্স কেমন লাগছে, তা ইতিমধ্যে কমেন্টে জানিয়েছেন। গত পর্বটি কেমন লেগেছে আমাদের জানান, আর এই ফাঁকে আজকে বোনেদের স্রষ্টা ও বোন সৃষ্টির নেপথ্যের কিছু ঘটনা সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেই...

বোনেদের স্রষ্টা ও বোন সৃষ্টির নেপথ্যের কিছু তথ্যাবলি :

বোন সিরিজের ইংরেজি #৩ নং এর প্রচ্ছদ

জেফ স্মিথ একবার জানিয়েছিলেন, পাঁচ বছর বয়েসে তিনি লিভিংরুমে বসে ছবি আঁকছিলেন, তিনি যেটা এঁকেছিলেন সেটা দেখতে অনেকটা টি-শেপের পুরানো টেলিফোন হ্যান্ডসেট রিসিভার, সেটার থেকেই বের হচ্ছে একটা ভ্রূ কোঁচকানো এক চরিত্র, যার ইয়াব্বড় একটা হাঁ করা মুখ। চরিত্রটির হাবভাব ও বৈশিষ্ট্য থেকেই ফোন বোনের তুতোভাই খিট্‌খিটে ফোনি বোনের সৃষ্টি হয়েছিল। ডন মার্টিনের ম্যাড ম্যাগাজিন স্ট্রিপে বহুল ব্যবহৃত এক বর্গীয় পদবী “ফোনবোন” থেকেই ফোনের এই নামকরণ করেন স্মিথ। স্মিথ ১৯৭০ এর শুরুর দিকে প্রথম বোনের চরিত্রগুলির ওপর কাজ শুরু করেছিলেন, তখন ওনার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।

স্মিথের পছন্দের বই “মবি ডিক”-ও বোনের অনুপ্রেরণার কাজ করেছে, স্মিথের বহু-স্তরের বিবরণী ও সংখ্যাতত্ত্ব তাঁর বোনের বিভিন্ন কমিক্সের মধ্যে দিয়ে বর্ণনা করেছেন। বোন কমিক্সের গল্পের ধাঁচ বোঝাতে তিনি অন্যতম সেরা শিশুসাহিত্য “হাকলবেরি ফিন”-এর কথাও বলেছেন, ওঁনার মতে, “হাকলবেরি ফিনের মতো গল্পগুলো আমাকে টানে, যেসব গল্প শুরুতে বেশ সাধারণভাবেই শুরু হয়, যেন ছোটদের গল্প... কিন্তু ক্রমে গল্প যত এগোতে থাকে, গল্পের ঘটনাগুলো আরও একটু একটু করে গাঢ় হতে থাকে, গল্পের থিম আরও বাস্তবধর্মী ও জটিল হতে শুরু করে— এই ধরনের কাহিনীগুলোই আমাকে এগিয়ে চলার প্রেরণা যোগায়।” এছাড়াও মূল স্টার ওয়ার্স ট্রিলজি, জে. আর. আর. টলকিনের লর্ড অফ দ্য রিংস আর বিভিন্ন ক্লাসিক রূপকথা ও পৌরাণিক কাহিনীসমূহ বোনের অনুপ্রেরণার কাজ করেছে।

ওহিও ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালীন, তিনি দ্য ল্যান্টার্ন নামের এক স্টুডেন্ট নিউজপেপারের জন্য “থর্ন” নামের একটি কমিক স্ট্রিপ রচনা করেন, যে চরিত্রটিকে আমরা বোনে পরবর্তীতে দেখেছি।

বোন সিরিজের বাংলা #৩ নং এর প্রচ্ছদ

১৯৯১ সালে স্মিথ নিজের কার্টুন সিরিজের প্রকাশের জন্য কার্টুন বুকস নামের একটি প্রকাশনা কোম্পানির প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম দিকে স্মিথ নিজেই সেলফ পাবলিশিং শুরু করেন, অর্থাৎ তাঁকে অর্থলগ্নি থেকে শুরু করে বণ্টন, চিঠিপত্রের উত্তর দেওয়া, সব ধরনের গ্রাফিক্সের ও লেটারিঙের কাজ (যেগুলো উনি নিজের হাতে করতেন), সব কিছু ছাপতে পাঠানো, সব অর্ডার নেওয়া ইত্যাদি সব কিছুই একা হাতে সামলাতে হত, এতে লেখা আর ছবি আঁকার জন্য ফোকাস করতে বেশ অসুবিধায় পড়েন, যার জন্য প্রোডাকশনের কাজ পিছিয়ে যেতে থাকে। তাই তিনি ওঁনার স্ত্রী বিজয়া আইয়ারকে সিলিকন ভ্যালির ভালো চাকরির থেকে ইস্তফা দিয়ে ওনাকে কার্টুন বুকস-এর প্রেসিডেন্টের পদে বসে তাঁকে সাহায্য করার প্রস্তাব দেন। ফলস্বরূপ স্মিথ আবার নিজের কাজে মন দিতে পারেন আর বিক্রি আরও বেড়ে যায়।

১৯৯৫ সালে ইমেজ কমিক্সের থেকে বোন ছাপতে শুরু করেন। ক্যাটালগে বইগুলোর স্থান দেওয়ার জন্য এটা একটা সাময়িক ব্যবস্থা ছিল, কালেক্টেড ভলিউমগুলো তখনো কার্টুন বুকস থেকেই প্রকাশিত হত। ইমেজে প্রকাশের সময় প্রথম ২৭টি ইস্যু আবার নতুন প্রচ্ছদ সমেত নতুন করে প্রকাশিত হয়, সেইগুলোর ওপরের বাঁ দিকের কর্নারে থাকত ইমেজ কমিক্সের স্বতন্ত্র লোগো। কার্টুন বুকসের তরফ থেকে বেরনো বইগুলোর ব্যাক কভার কালো রঙের থাকত, সেই সাথে ভেতরের কোনও এক প্যানেল ইনসেটে দেওয়া হত। পরের দিকের বইগুলোতে প্রচ্ছদের লোগোর রঙ পরিবর্তন করা হয়। ২০০৪ এর জুন মাসে ৫৫ নম্বর সংখ্যায় কমিক্সটির সমাপ্তি ঘটে, সেই সংখ্যার ব্যাক কভারে ভেতরের কোনও কমিক প্যানেলের বদলে ১০ই মে স্মিথের হাতে আঁকা কমিক্সটির শেষ পাতাটি ধরা অবস্থায় স্মিথের একটি সাদাকালো ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে একটা ইন্টারভিউতে স্মিথ জানান যে উনি প্রথম সংখ্যায় কাজ করার আগেই, তিনি শেষ পাতাটি এঁকেছিলেন। ৫৫টি ইস্যু পরবর্তীকালে সংগ্রহ আকারে একেকটি ভলিউমে প্রকাশ পায়।

নিচে সেগুলোর একটি সম্পূর্ণ তালিকা দেওয়া হলো :

নং নাম সাদাকালো সংস্করণ রঙিন সংস্করণ
আউট ফ্রম বোনভিল (প্রথমে দ্য কমপ্লিট বোন অ্যাডভেঞ্চার্স ভলিউম ১ নাম দিয়ে প্রকাশিত হয়) ১৯৯৫ ২০০৫
দ্য গ্রেট কাউ রেস (প্রথমে দ্য কমপ্লিট বোন অ্যাডভেঞ্চার্স ভলিউম ২ নাম দিয়ে প্রকাশিত হয়) ১৯৯৫ ২০০৫
আইস অব দ্য স্টর্ম (প্রথমে দ্য কমপ্লিট বোন অ্যাডভেঞ্চার্স ভলিউম ৩ নাম দিয়ে প্রকাশিত হয়, ২০ নং সংখ্যাটি বাদ দিয়ে) ১৯৯৬ ২০০৬
দ্য ড্রাগনস্লেয়ার ১৯৯৭ ২০০৬
রক জ : মাস্টার অব দ্য ইস্টার্ন বর্ডার ১৯৯৮ ২০০৭
ওল্ড ম্যানস কেভ ১৯৯৯ ২০০৭
ঘোস্ট সার্কেলস্‌ ২০০১ ২০০৮
ট্রেজার হান্টারস্‌ ২০০২ ২০০৮
ক্রাউন অব হর্নস্‌ ২০০৪ ২০০৯

আজ এই পর্যন্তই, পরবর্তী পোস্টে স্বাদবদল হবে... আপাতত আজকে বোনের তৃতীয় পর্ব পড়তে থাকুন।


গত এক পর্বে ডাউনলোড অপশন তুলে দেওয়ায় অনেকে আক্ষেপ করেছিলেন, তাদের কথা মাথায় রেখেই আবার ডাউনলোড অপশন চালু করা হলো। কমিক্সটি পড়ার পর আপনার মতামত একান্ত কাম্য।

অনুবাদ : ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল
প্রচ্ছদপট রূপান্তর ও বর্ণ সংস্থাপন : রূপক ঘোষ

আগামী পর্বে বোনের তিন পর্বের মধ্যান্তরে রিপ কার্বি চিত্রচোরে আসবেন...

শুক্রবার, মে ১৭, ২০১৯

পোস্ট #০৩৭ : বোনেরা আবার বাংলায়... #দ্বিতীয় পর্ব


গত পর্বে শুরু হয়েছিল জেফ স্মিথের বোন


বোন সিরিজের ইংরেজি #২ নং এর প্রচ্ছদ

এই কমিক্সটি অনুবাদ করছেন আমাদের সবার প্রিয় ইন্দ্রনীল’দা। অনেকে নতুন এই মজার কমিক্স কেমন লাগছে, তা কমেন্টে জানিয়েছেন। গত পর্বটি কেমন লেগেছে আমাদের জানান, আর এই ফাঁকে আজকে বোনেদের স্রষ্টার সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু কথা জেনে নেই...

জেফ স্মিথ; ২০১১ সালে তোলা ফটো।

বোনেদের স্রষ্টা :


বোনেদের স্রষ্টা হলেন অ্যামেরিকান কার্টুনিস্ট জেফ স্মিথ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ১৯৬০ সালে পেনসিলভেনিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন আর ওহিয়োতে বড় হন। প্রথাগত শিক্ষা না থাকলেও উনি কার্টুনিং শিখেছিলেন বিভিন্ন কমিক স্ট্রিপ, কমিকবুক আর অ্যানিমেটেড টিভি সিরিজ দেখে। চার্লস এম শ্যুলজ-এর পিনাট্‌স ওনার খুব পছন্দের সিরিজ ছিল, ছোটবেলায় ওনার বাবা ওকে পিনাট্‌স পড়ে শোনাতেন। এছাড়া কার্ল বার্ক্স-এর আঙ্কেল স্ক্রুজও ওনার খুব পছন্দের ছিল। বোনের সৃষ্টির পেছনে কাল বার্ক্সের আঙ্কেল স্ক্রুজেরও অনুপ্রেরণা কাজ করেছে। স্মিথ চাইতেন স্কুজের কোনো বড় অ্যাডভেঞ্চার হোক, বড় ধরনের অ্যাডভেঞ্চার গল্প ওনার বেশ ভালো লাগত। নয় বছর বয়সে স্মিথ ওয়াল্ট কেলি আর চাক জোন্সের কার্টুন “পোগো বার্থডে স্পেশাল” টিভিতে দেখেছিলেন, সেই প্রোগ্রামের পরদিন স্কুলের একটা মেয়ে বাবার পোগোর একটা বই এনে স্মিথকে দেয়, ওনার মতে এরপর থেকে ওটা দেখার পর ওনার কমিক্সের প্রতি ধারণাই বদলে যায়। স্মিথের কাছে সেই বইটি আজও তার টেবিলে ড্রয়িং বোর্ডের পাশে রাখা আছে, আর উনি কেলিকেই ওনার কমিক্স লেখার বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে মানেন।

ফ্র্যাঙ্ক মিলারের “ডার্ক নাইট রিটার্নস”, আর্ট স্পিগেলম্যানের “মাউস” আর অ্যালান মুরের “ওয়াচম্যান” দেখে তার মনের মধ্যেও নিজের একটা অ্যানিমেটেড টাইপের, কমিক্স মাধ্যমের একটা কাহিনী বানানোর ইচ্ছা জাগে, স্মিথ বোন বানানোর সিদ্ধান্ত নেন।

বোন সিরিজের বাংলা #২ নং এর প্রচ্ছদ

১৯৯১ সালে স্মিথ নিজের কার্টুন সিরিজের প্রকাশের জন্য কার্টুন বুকস নামের একটি প্রকাশনা কোম্পানির প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম দিকে স্মিথ নিজেই সেলফ পাবলিশিং শুরু করেন, অর্থাৎ তাঁকে অর্থলগ্নি থেকে শুরু করে বণ্টন, চিঠিপত্রের উত্তর দেওয়া, সব ধরনের গ্রাফিক্সের ও লেটারিঙের কাজ (যেগুলো উনি নিজের হাতে করতেন), সব কিছু ছাপতে পাঠানো, সব অর্ডার নেওয়া ইত্যাদি সব কিছুই একা হাতে সামলাতে হত, এতে লেখা আর ছবি আঁকার জন্য ফোকাস করতে বেশ অসুবিধায় পড়েন, যার জন্য প্রোডাকশনের কাজ পিছিয়ে যেতে থাকে। তাই তিনি ওনার স্ত্রী বিজয়া আইয়ারকে সিলিকন ভ্যালির ভালো চাকরির থেকে ইস্তফা দিয়ে ওনাকে কার্টুন বুকস-এর প্রেসিডেন্টের পদে বসে তাকে সাহায্য করার প্রস্তাব দেন। ফলস্বরূপ স্মিথ আবার নিজের কাজে মন দিতে পারেন আর বিক্রি আরও বেড়ে যায়। ১৯৯১ থেকে শুরু করে স্মিথ ২০০৪ পর্যন্ত বোনের ৫৫টা ইস্যু প্রকাশ করেন। প্রথমে বোন সাদা কালো প্রকাশিত হত, এবং সেগুলো বেশ সফল ও জনপ্রিয় ছিল। পরবর্তীতে পুরোটা রঙিন ছাপা হয়। (চলবে...)

আজ এই পর্যন্তই, পরবর্তী পোস্টে এই নিয়ে আমরা আরও আলোচনা করব... আপাতত আজকে বোনের দ্বিতীয় পর্ব পড়তে থাকুন।


গত পর্বে ডাউনলোড অপশন তুলে দেওয়ায় অনেকে আক্ষেপ করেছিলেন, তাদের কথা মাথায় রেখেই আবার ডাউনলোড অপশন চালু করা হলো। কমিক্সটি পড়ার পর আপনার মতামত একান্ত কাম্য।

অনুবাদ : ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল
প্রচ্ছদপট রূপান্তর ও বর্ণ সংস্থাপন : রূপক ঘোষ

পরবর্তী পর্বে বোনেরা ফের ফিরবে...

রবিবার, এপ্রিল ১৪, ২০১৯

পোস্ট #০৩৬ : বোনেরা এবার বাংলায়...


আজ পয়লা বৈশাখ।

এই নববর্ষ নবরূপে রাঙিয়ে দিক প্রতিটি মুহূর্ত, সুন্দর ও সমৃদ্ধ হোক সকলের আগামী দিনগুলি... সকলকে শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানাই...
২০১৬ সালে পয়লা বৈশাখে শুরু হয়েছিল চিত্রচোরের পথচলা। সেই হিসেবে আজকের দিনেই চিত্রচোর তৃতীয় বর্ষে পা দিল। গত কয়েক বছরে আপনাদের মতো অনেক গুণমুগ্ধ অনুরাগীরাই চিত্রচোরের বড় প্রাপ্তি ও এটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মূল কারণ।
অনেকদিন পর ফিরে এসে বেশ ভালো লাগছে। গত বছর অনেক প্ল্যান থাকলেও সেটা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। গত বছর নানা কাজের চাপে শুরুর দিকের খান-দু’য়েক ছাড়া আর কোনো কিছু পোস্ট করতে পারিনি। আসলে একার পক্ষে অনুবাদ করা বেশ চাপের হয়ে যাচ্ছে। যদিও এর মধ্যে শুভাগত’দা, আশিকুর ভাই, ইন্দ্রনীল’দা, গৌতম’দা, বেদাংশু, স্বাগত’দা এবং আরও অনেকে অনুবাদ ছাড়াও নানাভাবে সাহায্য করেছেন, তবুও ভবিষ্যতে নতুন কেউ চিত্রচোরের জন্য কমিক্স অনুবাদ করতে চাইলে তাকেও স্বাগত জানাই।


হেডলাইন পড়ে অবাক হচ্ছেন বুঝি? তাহলে আজকের পোস্ট সম্পর্কে সামান্য কিছু কথা জানিয়ে রাখি :
এই বোন আমার আপনার বোনেদের কথা নয়, এটা জেফ স্মিথের বিখ্যাত কমিক্স চরিত্র “বোন”-দের কথা বলা হয়েছে। সে যাই হোক, এই বোনেদের সাথে আমার আলাপ ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল’দার মারফত।
একদিন ফেসবুক ঘাঁটতে ঘাঁটতে হঠাৎ দাদার প্রোফাইলে দাদার করা বোনের কিছু ফ্যান ট্রান্সলেশান দেখতে পাই, সেটা এক নিঃশ্বাসে শেষ করেছিলাম। তারপর বোনের বাকিগুলো ইংরেজিতে পড়েছি, কিন্তু সত্যি বলতে কি দাদার ভাবানুবাদ এতটা ভালো লেগেছিল যে, আমার মনে ইংরেজি ভার্সানটা অতটা দাগ কাটতে পারেনি। সেই থেকে ইন্দ্রনীল’দার পেছনে আদা জল খেয়ে পড়েছিলাম এটাকে শেষ করতেই হবে। অবশেষে নানা কাজের ফাঁকে সেই সুযোগ চলে এলো আর আমরা আবার শুরু করলাম “বোন”।
অয়ন রাহার “জিরো কমিক্স”-এর ফেসবুক পেজে একটা বিভাগ ছিল যেখানে বিভিন্ন কমিক্স চরিত্রদের নিয়ে ছোট একটি লেখা থাকত, সেই বিভাগের নাম ছিল “কমিক্সের ৭-১৭”, সেখানে ইন্দ্রনীল’দা বোনকে নিয়ে একবার লিখেছিলেন, সেটাই আরও একবার আপনাদের সামনে আনতে চাই :


এরকম আরও নানান আপডেট পাবেন এই ঠিকানায় : https://www.facebook.com/491098690942433/photos/?tab=album&album_id=576909192361382

স্রষ্টা আর তার সৃষ্টিকে নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা না হয় পরের পর্বে করা যাবে। আপাতত পড়তে থাকুন বোনের প্রথম পর্ব।


গত পর্বে ডাউনলোড অপশান তুলে দেওয়ায় অনেকে আক্ষেপ করেছিলেন, তাদের কথা মাথায় রেখেই আবার ডাউনলোড অপশান চালু করা হলো। কমিক্সটি পড়ার পর আপনার মতামত একান্ত কাম্য।

অনুবাদ : ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল
প্রচ্ছদপট রূপান্তর ও বর্ণ সংস্থাপন : রূপক ঘোষ

পরবর্তী পর্বে বোনেরা ফের ফিরবে...