বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৮, ২০১৬

Post #011 ...পাপের শহর # ০৫ অন্তিম পর্ব

এ এক অন্য শহর...এটা প্রকৃতপক্ষেই পাপের শহর - সিন সিটি... 


প্রথমেই সবাইকে রাখী পূর্ণিমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।

দীর্ঘ পাঁচ সপ্তাহ ধরে চলার পর আবশেষে আজ সমাপ্ত হতে চলেছে ফ্রাঙ্ক মিলারের সিন সিটিঃ দ্য হার্ড গুডবাই এর বাংলা অনুদিত সংস্করণ পাপের শহরঃ কঠিন বিদায়।প্রতিবারের মতোই এই অন্তিম পর্বে শুধুমাত্র শেষটুকু না দিয়ে এতদিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে চলে আসা কমিক্সটির আগের  পর্বগুলোও মিলিয়ে এই পর্বে সমগ্র সংকলন (কালেক্টেড এডিশান) প্রকাশিত হল।

আমেরিকার পশ্চিমে বেসিন সিটি নামের এক অপরাধমুলক শহর এই কাহিনীর প্রেক্ষাপট।অপরাধই হল এখানের প্রধান পেশা।অন্ধকার নামলেই পেল্লায় সব অট্টালিকার ছায়ায় নিঃশব্দে ঘুরে বেড়ায়
 ছায়ামানবেরা।এরা আঁধারের প্রানী,এই যেমন ধরুন জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ এক বক্সার,নোংরা অপরাধীরা,কোকেন ও ড্রাগস্‌ লর্ডেরা,নানা চোরাচালানকারী আর গনিকাদের দালালেরা।এরা অস্পস্ট হলেও কঠোর বাস্তব।পাপের এই বসতির নাম বেসিন সিটি। এই শহরকে সবাই ডাকে সিন সিটি বা পাপের শহর নামে।এখানে করনীয় যা কিছু আছে তা সব এখানে অপরাধ বলে গণ্য হয়,পুলিশ ও আইন এখানে হাস্যকর শব্দ।বন্ধুকই হল এখানে ক্ষমতার উৎস।

সিন সিটির বঙ্গানুবাদ সংখ্যার প্রচ্ছদ
এই শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েকটি চরিত্রকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে সিন সিটির গল্প।এদের মধ্যে মার্ভ‌,ডূইট,ন্যান্সি,হ্যারিংটন,মিহো ও ওয়ালেস প্রধান।এদের নিয়ে নব্বইয়ের দশকে রোমহর্ষক নিও-নয়ার কাহিনী লেখেন একাধারে লেখক ও চিত্রশিল্পী ফ্রাঙ্ক মিলার। তিনি কমিক্স দুনিয়ার এক প্রবাদ প্রতিম ব্যক্তিত্ব।

অন্য দিনের মতো আজ আগের গল্পের সারংশ দেওয়া হল না,যারা আগে পড়েননি তারা যাতে আগে থেকে দেখে ফেলতে না পারেন অনেকটা সেজন্যই।


আজ আমরা পড়বো সিন সিটির বাংলা অনুবাদ পাপের শহর।এটির অনেক গুলো গল্পের মধ্যে প্রথমটি হল দ্য হার্ড গুডবাই,নায়ক মার্ভ‌।আমরা আজ আপনার সামনে উপস্থাপন করতে চলেছি পাপের শহরঃ কঠিন বিদায় সমগ্র সংকলন।


সিন সিটি নিয়ে সম্পূর্ণরূপে সাতটি কমিকস প্রকাশিত হয়েছে।যার মধ্যে প্রথমটি আজ আপনারা পড়বেন।আসুন দেখে নেই আর কি কি গল্প আছে সিন সিটিতে-
সংখ্যানামপ্রকাশকাল
০১।দ্য হার্ড গুডবাই ১৩ টি পর্ব অর্থাৎ প্রায় দেড় বছর ধরে চলেছিল।
০২।এ ডেম টু কিল ফর৬ টি সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়।
০৩।দ্য বিগ ফ্যাট কিল৫ টি সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়।
০৪।দ্যাট্‌ ইয়োলো বাস্টার্ড৬ টি সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়।
০৫।ফ্যামেলি ভ্যালুজ্‌১২৮ পেজের গ্রাফিক নভেল।
০৬।বুজ,ব্রডস্‌ এন্ড বুলেটস্‌কয়েকটা ওয়ান শটের সংকলন
০৭।হেল এন্ড ব্যাক৯ টি সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়।

পাঠকদের ভালো লাগলে ভবিষ্যতে পরের গল্প গুলো অনুবাদের ইচ্ছা রইল।বিশেষ করে এ ডেম টু কিল ফর আর দ্যাট্‌ ইয়োলো বাস্টার্ড।কেমন লাগছে জানাবেন,এই আশা রাখি। 
লেখক ও চিত্রশিল্পী ফ্রাঙ্ক মিলার

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ-

নামঃ-  সিন সিটিঃ দ্য হার্ড গুডবাই
লেখক ও চিত্রশিল্পীঃ-ফ্রাঙ্ক মিলার
প্রকাশকঃ-ডার্ক হর্স কমিকস
প্রকাশকালঃ-১৯৯১ এপ্রিল(পঞ্চম বার্ষিক বিশেষ সংখ্যা),১৯৯১জুন -১৯৯২জুন পর্যন্ত
টাইপঃ-মাসিক, ২০০৫ এ কালেক্টেড এডিশান বের হয়।


* সমস্ত তথ্যসূত্র উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত।

বিদ্রঃ এটি একটি অ্যাডাল্ট কমিক্সএরকম মাপের একটি সাইকোলজিক্যাল,এরটিক,ক্রাইম থ্রিলার গল্পের গভীরতা বোঝার জন্য পুরোপুরি পরিণত মস্তিষ্কের পাঠকের প্রয়োজন।এতে বেশিরভাগ উপাদান বড়োদের জন্যই সৃষ্ট।গল্পটির সাইকোলজি বাচ্চাদের (বড়দের তো অবশ্যই) মনে গভীরভাবে রেখাপাত করতে বাধ্য,এছাড়াও এতে অতিরিক্ত মাত্রায় নগ্নতা,অশ্লীল গালাগাল ও তীব্র নৃশংসতা দেখানো হয়েছে।কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক দের জন্য তাই ১৮ বছরের কম বয়স্ক পাঠকদের এটি পড়তে নিষেধ করা হল।



 আজ পড়ুন পাপের শহর এর প্রথম পর্ব শুধু মাত্র চিত্রচোর ব্লগে। 
অনুবাদ কেমন হচ্ছে জানাতে ভুলবেন না যেন।

আগামি পর্বে অ্যাস্টেরিক্স আবার আসছে,শুধুমাত্র চিত্রচোর ব্লগে...





বাংলায় অনুবাদ ও প্রচ্ছদপট রূপায়নঃ রূপক ঘোষ।




রবিবার, আগস্ট ০৭, ২০১৬

Post #010 ...পাপের শহর # ০৪

এ এক অন্য শহর...এটা প্রকৃতপক্ষেই পাপের শহর - সিন সিটি... 


এসে গেছি ফ্রাঙ্ক মিলারের সিন সিটির বাংলা অনুবাদ পাপের শহর চতুর্থ পর্ব নিয়ে।আগামী পর্বে সমাপ্তি ঘটতে  চলেছে ফ্রাঙ্ক মিলারের পাপের শহরঃ কঠিন বিদায়ের এই রোমহর্ষক অধ্যায়ের।

আজ সময়ের অভাবে শুধু Sin City চলচিত্রের কিছু ফোটোগ্যালারী আর গল্পের সারসংক্ষেপ দিয়েই আমাদের আলোচনা শেষ করলাম আগামী পর্বে এ নিয়ে আরও কিছু আলোচনা করা যাবে।

মিকি রোর্ক মার্ভের চরিত্রে...এনার মুখের ভালো ছবি পাওয়া দুষ্কর।
মার্ভ তার প্রিয় গ্লেডীসের সাথে।

মার্ভ আর গোল্ডী।
মার্ভ আর উইন্ডি।

ন্যান্সি ক্যালাহ্যান এর চরিত্রে জেসিকা এলবা।
মার্ভ আর তার পেছনে নিঃশব্দে কেভিন।
সামনে থেকে কেভিন।
লুসেল বন্ধুক হাতে ফার্মের বাইরে,গায়ে মার্ভের কোট।
কেভিন চুপিসাড়ে বসে আছে মার্ভ আর লুসেলের কামরার জানালার বাইরে।

এবার আগের পর্বে আমরা যা পড়েছি তার সার-সংক্ষেপ পড়ে নেবঃ-

সারসংক্ষেপঃ- গল্পের শুরুতে মার্ভ গোল্ডী নামে একটা মেয়ের সঙ্গে এক রাত্রিবাস করে। মার্ভ এর জীবনের সেরা রাত উপহার দিয়েছিল গোল্ডী।দুজনেই প্রচণ্ড মদ্যপ অবস্থায় ছিল।ঘন্টা তিনেক বাদে মার্ভ ঘুম থেকে উঠে দেখে পাশে পড়ে আছে গোল্ডীর নিথর মৃতদেহ।গায়ে কোনও আচড় নেই কেউ নিঃশব্দে ঘরে ঢুকে তাকে খুন করে,মার্ভকে ফাঁসানোর জন্য।বাইরে পুলিশের গাড়ীর আওয়াজ পাওয়া যায়।সবাই আবার মার্ভ এর পেছনে পড়েছে।এবার শুরু হয় মার্ভ এর খেলা।কিছু পুলিশকে উত্তম মধ্যম দেওয়ার পরে সে একটা পুলিশের গাড়ী নিয়ে নদীর জলে লাফ দেয়।

সিন সিটির বঙ্গানুবাদ সংখ্যার প্রচ্ছদ
সেখান থেকে সাঁতার কেটে সে জল নিষ্কাশন পাইপের মধ্যে দিয়ে তার বন্ধু ও প্যারোল অফিসার লুসেলের কাছে পৌঁছায়,সেখানে সে তার অসুখের (পোস্ট ট্রোমাটিক ডিসঅর্ডার) বড়ি পায়।এবার সে তার বাড়িতে কিছুসময় গা ঢাকা দেয়।তার মায়ের সাথে কিছুসময় কাটায়,আর তার নতুন কাজের কথা জানায়।এরপর সে যায় কেডীর পাবে,গোল্ডীর খুনীর সন্ধানে।সেখানে সে উইভিল নামের এক ভাড়াটে গুন্ডাকে ঘুষ খাওয়ায় যাতে সে তার মদ্যপান করে পাবে বাওয়াল করার ভুয়ো খবর চতুর্দিকে রটিয়ে দেয় সেই উদ্দেশ্যে।এরপর স্টেজে ন্যান্সির আগমন ঘটে,কিছুক্ষন উদ্দাম নৃত্য চলে,এই সুযোগে মার্ভ এক গুপ্তঘাতকের পাল্লায় পড়ে। সে বন্দুক দেখিয়ে মার্ভকে পাবের বাইরে নিয়ে আসে।এবার মার্ভ খেলা শুরু করে ওদের মেরে মাটিয়ে শুইয়ে দেওয়ার আগে মার্ভ জেনে নেয় ট্রিপিল এস ক্লাবের মালিক এর সঙ্গে যুক্ত।এবার মার্ভকে তার সন্ধানে বের হতে হবে।এরই মধ্যে মার্ভ যেন হঠাৎটি আবার গোল্ডীর দেখা পায়,মার্ভ বুঝতে পারে যে,তার আবার ভ্রম হচ্ছে, আবার বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছে সে।এর মধ্যেই ভোর হয়ে আসে...

বৃথা ঘুমের চেষ্টায় সকালটা কোনরকমে কাটিয়ে,মার্ভ রাত্রে আবার তার অভিযানে বের হয়,সেইসঙ্গে শুরু হয় তার পাগলামিও।গোল্ডীর খোঁজে রাস্তায় কয়েকজনকে উত্তম মধ্যম দেওয়ার পর মার্ভ চার্চে যায়,প্রার্থনা করতে নয় বরং শাস্তি দিতে।সে আগেই রাস্তার চুনোপুঁটিদের কাছে জেনেছিল যে এতে পাদ্রীও জড়িয়ে আছে ,পাদ্রীর থেকে একটা ফার্মের ঠিকানা পায় সে।তারপর পাদ্রীকে যমের দক্ষিণ দুয়োর দেখিয়ে,সে পাদ্রীর মার্সিডিজ চালিয়ে ফার্মের দিকে যাওয়ার পথে আবার যেন গোল্ডীর দেখা পায় সেও একটা গাড়ি চালাচ্ছে।সেই গাড়ীর ধাক্কায় মার্ভ ছিটকে পড়ে,গোল্ডী তার দিকে গুলি করে।এরপর মার্ভ আবার নিজেকে সামলে নেয়,বুঝতে পারে আবার ওষুধ না খওয়ায় সে ভুলভাল দেখছে।এরপর গাড়ী ফার্মের থেকে নিরাপদ দূরত্বে রেখে চুপচাপ পায়ে হেটে ফার্মে প্রবেশ করে।সেখানে সে এক নেকড়ের পাল্লায় পড়ে,অনিচ্ছা স্বত্বেও তাকে খতম করে,আর তার গায়ের রক্তের গন্ধ থেকে খুঁজে বের করে পাশেই পুঁতে রাখা গোল্ডীর হাড়ের উচ্ছিষ্ট ও তার স্যান্ডেল।এর মধ্যেই আচমকা নিঃশব্দে পেছন থেকে একজন মার্ভকে আক্রমন করে।মার্ভ বুঝে যায় এটাই গোল্ডীর খুনি,তার সঙ্গে হাতাহাতি চলে বেশ কিছুক্ষন,শেষপর্যন্ত মাথায় হাতুড়ির এক ঘায়ে মার্ভ জ্ঞান হারায়।জ্ঞান ফিরতেই সে দেখে সে একটা হিমঘরের মধ্যে বন্দী রয়েছে,তার দেওয়ালের চারিদিকে মানুষের কাটা মুন্ডু স্টাফ করে রাখা রয়েছে,আর এককোণে লুসেল একা বসে কাঁদছে ও ঠাণ্ডায় কাঁপছে।সে লুসেলের কাছ থেকে জানতে পারে ওই লোকটা একটা নরখাদক।সে লুসেলের সামনে তার একটা হাত রান্না করে খেয়েছে, মার্ভ বুঝতে পারে যে লুসেল গভীরভাবে শক পেয়েছে।সে তার কোটটা লুসেলকে পরিয়ে দেয় আর সান্ত্বনা দিতে থাকে।নিজেকে সামলে নিয়ে লুসেল ধূমপান করে,ততোক্ষণে মার্ভ ওই ঘরের লোহার দরজাগুলো ভাঙ্গার আপ্রান চেষ্টা করতে থাকে। সেসময় মার্ভ একটা গাড়ীর আওয়াজে চুপ করে যায়,ছোট জানালা দিয়ে সে দেখতে পায় অন্ধকারে গাড়ীর হর্নের আওয়াজ আর একটা ডাক কানে আসে--কেভিন,আর সেই জানালার পাশে চুপিসাড়ে বসে থাকা কেভিন নিঃশব্দে ছুটে যাচ্ছে গাড়ীর দিকে।আবার দেখা হবে কেভিন,মার্ভের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে...

মার্ভ কি পারবে কেভিনের হাত থেকে বেঁচে ফিরতে,লুসেলকে বাঁচাতে।জানতে হলে পড়তেই হবে আমাদের আপনার সামনে আজকের উপস্থাপন পাপের শহরঃ কঠিন বিদায় চতুর্থ পর্ব।


বিদ্রঃ এটি একটি অ্যাডাল্ট কমিক্সএরকম মাপের একটি সাইকোলজিক্যাল,এরটিক,ক্রাইম থ্রিলার গল্পের গভীরতা বোঝার জন্য পুরোপুরি পরিণত মস্তিষ্কের পাঠকের প্রয়োজন।এতে বেশিরভাগ উপাদান বড়োদের জন্যই সৃষ্ট।গল্পটির সাইকোলজি বাচ্চাদের (বড়দের তো অবশ্যই) মনে গভীরভাবে রেখাপাত করতে বাধ্য,এছাড়াও এতে অতিরিক্ত মাত্রায় নগ্নতা,অশ্লীল গালাগাল ও তীব্র নৃশংসতা দেখানো হয়েছে।কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক দের জন্য তাই ১৮ বছরের কম বয়স্ক পাঠকদের এটি পড়তে নিষেধ করা হল।



 আজ পড়ুন পাপের শহর এর চতুর্থ পর্ব শুধু মাত্র চিত্রচোর ব্লগে। 
অনুবাদ কেমন হচ্ছে জানাতে ভুলবেন না যেন।



আগামি পর্বে পড়ুন এই রোমহর্ষক গ্রাফিক অ্যালবামের অন্তিম পর্ব,শুধুমাত্র চিত্রচোর ব্লগে...





বাংলায় অনুবাদ ও প্রচ্ছদপট রূপায়নঃ রূপক ঘোষ।