শনিবার, জুলাই ২৭, ২০১৯

পোস্ট #০৪০ : বোনেরা আবার বাংলায়... #চতুর্থ পর্ব_স্পেশাল পোস্ট


বোন | চতুর্থ অধ্যায় : হুংকার!


গত পর্বে আপনারা পড়েছিলেন রিপ কার্বি, যেটার মাধ্যমেই শুরু হয়েছিল আমাদের নতুন প্রজেক্ট “প্রজেক্ট : পুনরুদ্ধার”। সেটা সবে শুরু। মাঝেমধ্যে এই প্রজেক্টের অন্তর্গত বিভিন্ন পুরনো নিউজ পেপার কমিক্স স্ট্রিপকে পুনরুদ্ধার করে আপনাদের মাঝে নিয়ে আসব।

গত তিন পর্ব ধরে চলছিল জেফ স্মিথের বোন। মধ্যান্তরের বিরতির পর আবার আজ থেকে শুরু হলো...


বোন বাংলা ৪ নং ইস্যুর প্রচ্ছদ
বোন ইংরেজি ৪ নং ইস্যুর প্রচ্ছদ

এবার বোনেদের কথায় আসা যাক, বোনের প্রথম ছ’টা ইস্যু নিয়ে বোনেদের প্রথম বই “আউট ফ্রম বোনভিল” বা আমাদের অনুবাদে “বোনভিল থেকে পালিয়ে” বইটির থুড়ি কমিক্স অ্যালবামটির চতুর্থ পর্ব আজকেই পড়া যাবে। আর মাত্র হাতে বাকি থাকছে দুটি পর্ব, যা ইন্দ্রনীল’দার অনুবাদে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ পাবে আগামী দুই মাস (অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর) যাবত। ততদিন ধৈর্য ধরে থাকতেই হবে। অনেকেই বোন কেমন লাগছে, তা আমাদের জানিয়েছেন, যারা এখনো জানাননি অবিলম্বে কমেন্টে বা মেইলে জানান।

আজকে আর বোন নিয়ে নয়, তার পরিবর্তে এক অনেক দিনের পুরনো ব্লগার ও “বিশেষ বন্ধুর” -- “বিশেষ প্রশ্নের” উত্তর দিতে চাই। যদিও প্রশ্ন একটাই ছিল, তবুও আমি আরও নয়খানা প্রশ্ন নিজের মতো সাজিয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করছি (কারণ আর কেউ কোনও প্রশ্ন করেন না)।


আমার আগে এই বিষয়ে ব্লগার বন্ধু ও সহযোদ্ধা দেবাশিষ তার ব্লগ "এবং কমিক্স" এ এই ব্যাপার নিয়ে একটি পোস্ট করেছিল, সেই ট্রেন্ডকেই ফলো করছি, #Followingthetrend। এরপর আমি চাই পার্থ অরণ্যদেব আর মিস্টার ওয়াকার দুজনেই তাদের ব্লগে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে কোনও একটা পোস্টে আলোকপাত করুক। সেইদিনের অপেক্ষায় থাকব। এবার পড়তে থাকুন, ধন্যবাদ।

০১। আপনি কেন ব্লগিং করেন?

উঃ ঘরের খেয়ে বোনের মোষ তাড়াতে ভালো লাগে তাই (উত্তরটা ভালো না লাগলে পরের লাইন পড়ুন)। সোজাকথায় বলি, আমি অতিমাত্রায় কমিক্স পাগল ছেলে। খাওয়া, ঘুম, কাজ, কমিক্স আর সিনেমা এই নিয়েই আমার জীবন। একদম সহজ সরল ব্যাপার। কলেজে পড়ার সময় বেশ কিছু বিশেষ বাংলা কমিক্স ব্লগের সন্ধান পাই। সেখানেই আবার ইন্দ্রজালের বিপুল সম্ভার ও অন্যান্য বাংলা কমিক্স ডিজিটাল ভার্সন পেয়ে আউলে গেছিলাম। কমিক্স তখনো অনুবাদ করতাম। একদিন হার্ডডিস্ক উড়ে গেল, আমার প্রথম দিকের বেশ কিছু অনুবাদ জলাঞ্জলি দিতে হলো। তারপর আবার কাজ শুরু করেছিলাম কিন্তু সেগুলো সবটাই নিজের জন্য, এই বিভিন্ন ব্লগ ফলো করার কারণে মাথায় হঠাৎ একটা শুভ বুদ্ধির (পড়ুন দুর্বুদ্ধি) উদয় হয়। কিন্তু তার আগে তো আরও কন্টেন্ট দরকার, সেই নিয়ে আরও গাদাখানেক সময় নষ্ট করে বেশকিছু কন্টেন্ট অনুবাদ করে ফেলি। সেগুলোর আর্কাইভ করে রাখার জন্য মূলত এই ব্লগের সৃষ্টি।

০২। ঠিক কবে থেকে অনুবাদ করছেন? কি কি সফটওয়্যার ইউজ করেন?

উঃ ছোট থেকেই আমি কমিক্স পড়তে ভালোবাসতাম, এখনো পড়ি। ছোটবেলার থেকেই গথাম কমিক্সের ইংরেজি কমিক্সগুলোর স্পিচ্‌ বাবল গুলোতে কাগজ কেটে কেটে আঠা মেরে হাতে বাংলায় লিখে রাখতাম, সেই থেকে শুরু। পরে ঘরে কম্পিউটার আসার পর সেই কাজটাই পেইন্ট এবং বাংলা ওয়ার্ড দিয়ে করতে শুরু করি। সেই থেকে আসতে আসতে বহু বিবর্তন হতে হতে আজ, শুধু ফটোশপে এসে ঠেকেছে সাথে বাংলা লেখার জন্য অভ্র কিবোর্ড তো আছেই। শুরু করেছিলাম সম্ভবত ২০০৭-২০০৮, কিন্তু সেগুলো পাতে দেওয়ার মতো ছিল না।

০৩। ব্লগ কবে খুলেছেন? আগে থেকে কে কে জানত, পাশে ছিল?

উঃ খুবই অমূলক প্রশ্ন। যেকোনো বুদ্ধিমান পাঠক ঠিক খুঁজে বের করতে পারবেন এর উত্তর। তবুও বলছি, আমি তখন মুম্বাইতে সবে কাজে জয়েন করেছি। তখন অলরেডি ব্লগের কন্টেন্ট রেডি করছি, আর ভাবছি, আজ খুলব না কাল খুলব? এইসব ছাইপাঁশ ভাবতে ভাবতে ১৪২৩ এর বর্ষবরণের দিন (পয়লা বৈশাখ) অর্থাৎ ২০১৬ সালের ১৪ই এপ্রিল অবশেষে আমাদের পথ চলা শুরু হয়।

শুরুর আগে কয়েকজন ব্লগের ব্যাপারটা জানতেন, যেমন রুস্তম’দা, ইন্দ্রনাথ’দা, স্বাগত আর পার্থ অরণ্যদেব। আর কেউ জানত কিনা খেয়াল নেই। আর জানতেন আমার মা, বাবা ও মেসের কিছু বন্ধুরা।

০৪। “চিত্রচোর” ব্লগের এইরকম নাম দিলেন কেন?

উঃ একই প্রশ্নের উত্তর বারবার দিয়ে মাথাখারাপ করতে চাই না, এমনিও বেশি বড় লেখা হলে কিছু পাঠক আঁতকে ওঠেন, তাই জানার খুব ইচ্ছা হলে নিচের অংশটা পড়ে দেখতে পারেন।

শুভ সূচনা


০৫। আগে অনেক বেশি পোস্ট হত, এখন পোস্টের সংখ্যা দিনদিন কমছে কেন?

উঃ এই অভিযোগটা আগেও অনেকেই করেছেন, আমিও তো অভিযোগ করি, কমেন্ট না পেলে ব্লগ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেই, কিন্তু সবাই কি কমেন্ট করেন?

যাই হোক, প্রশ্নের উত্তরটা হলো এখন অনেক আলসে হয়ে গেছি। আগে সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অফিস করে, বন্ধুদের রান্নাবান্নায় হেল্প করে খাওয়া দাওয়া করে, রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত অনুবাদ করতাম (রোববার ছুটির দিনে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে না গিয়ে)। তাই অনেকগুলো পোস্ট হত, আর এখন অন্য বেশ কিছু কাজের পাশাপাশি রুটিনটা বেশ কিছুটা বদলেছে। আর আমার বিশ্বাস এখন আগের থেকে অনুবাদ ও প্রেজেন্টেশনের মানও বেশ কিছুটা বদলেছে, তবে সেটা ঠিক কিনা পাঠকরাই ভালো বলতে পারবেন।

তাছাড়াও এটা তো অনুবাদ ব্লগ, এখানে শুধু স্ক্যান করে কিছু ছাড়া হয় না, বা এখনো পর্যন্ত ছাড়া হয়নি যে কম সময়ে কিছু দিতে পারব, তাই ভালো অনুবাদ পেতে গেলে সেটা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। এছাড়া আর কি করার আছে, আপনারাই বলুন।

০৬। কমেন্ট নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করেন কেন? এটা কি একটু বেশি পাগলামি নয়? আপনি তো নিজেই ব্লগ খুলেছেন, কেউ তো আপনাকে জোর করেনি, তাই পাঠককে কমেন্ট নিয়ে অযথা বারবার বিরক্ত করার কি আছে?

উঃ বিনামূল্যে পাঠকেরা নিজের মাতৃভাষায় কমিক্স পড়তে পারছেন, আমাদের কাজ কেমন হচ্ছে, সেটা জানানো তো অবশ্যই পাঠকদের কর্তব্য। কোনও সিরিজ ভালো লাগছে বা মন্দ লাগছে বা আগের কোনও কমিক্স কেমন লেগেছে, বা সেই ধরনের আরও কিছু কমিক্স পড়ার ইচ্ছে থাকলে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্টে জানানো উচিৎ। মনে রাখবেন, পাঠকদের উৎসাহ না থাকলে আমাদের কাজ করার ইচ্ছেটা কিন্তু কমতে থাকে। তাই আমাদের পোস্ট কেমন লাগছে, কোথায় কি খামতি আছে, কিভাবে আরও ভালো করা যায়, অথবা অন্য কোনও সাজেশন থাকলে নির্দ্বিধায় কমেন্টে জানানো উচিৎ। শুধু আমার ব্লগেই নয়, অন্য কোনও ব্লগ থেকে ফাইল নামালেও একই কাজ করা উচিৎ। কিন্তু তার পরিবর্তে শুধু ডাউনলোডই হয়ে যায়। যদি একটা ফাইল ১০০+ ডাউনলোড হয়, তবে অন্তত ২০-২৫ জনের তো জানানো উচিৎ, তাই না? কিন্তু চিত্রচোরের পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের সবচেয়ে বেশি যে কমিক্সটি পাঠকেরা পড়েছেন (অ্যাসটেরিক্স ও হারানো পাণ্ডুলিপি) সেটার ডাউনলোড সংখ্যা ৯৫০+ কিন্তু পোস্টে কমেন্ট সংখ্যা সর্বসাকুল্যে ১৩ টি। এটা কি ঠিক? আপনারাই বলুন...

তবে কৃতজ্ঞতামূলক কমেন্ট (দারুণ হচ্ছে, চালিয়ে যান, ইত্যাদি) এর চেয়ে আমার গঠনমূলক কমেন্ট (এই জায়গায় ভুল আছে, এভাবেও করা যেত, বা পরে এইভাবে চেষ্টা করো, ইত্যাদি) বেশি পছন্দের।

০৭। ডাউনলোড এর সংখ্যা এত বেশি আর কমেন্ট এতো কম এর কারণ কি হতে পারে? আর গত একটা পোস্ট থেকে আমরা জেনেছি যে, বহু কন্টেন্ট চুরি হচ্ছে, এটার ব্যাপারে কি বলতে চান?

উঃ হ্যাঁ, আসলে হয়কি, অনেকে ব্লগের পোস্ট শেয়ার না করে শুধু ডাউনলোড লিঙ্ক বা ব্লগ থেকে ডাউনলোড করে নিজের ড্রাইভ থেকে মিরর করে শেয়ার করেন। এতে করে ডাউনলোড সংখ্যা বেড়ে যায়, কিন্তু ওয়াটারমার্ক থাকলেও অনেকেই সঠিক ব্লগের হদিস পান না, তাই এই অবস্থা হয়েছে।

বেশ কয়েকমাস যাবত দেখছি, অনেকেই চিত্রচোর সহ গুটিকয়েক অন্যান্য বাংলা অনুবাদ ও পুরানো দুষ্প্রাপ্য কমিক্স ব্লগ থেকে বিভিন্ন কন্টেন্ট “শুধুমাত্র এক স্থানে একত্রিত করার উদ্দেশ্যে” অবাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন স্থানে আমাদের না জানিয়েই শেয়ার করছেন, তার মধ্যে একাংশ আবার বিভিন্ন এড প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের কন্টেন্ট ডাউনলোড করে অন্য ড্রাইভ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা লিঙ্ক থেকে শেয়ার করছেন। অনেকে অজ্ঞতাবশত কাজটি করেছিলেন এবং পরবর্তীতে সেটি শুধরেও নেন, তাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু বাকি বেশ কিছু ব্লগের ব্লগারদের এ বিষয়ে মেইল করলেও কোনও প্রত্যুত্তর আসেনি (যদিও ব্লগে লেখা ছিল, কোনও কন্টেন্ট মোছার প্রয়োজন হলে মেইলে জানাতে)। এটি একটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা বলে মনে করি। আমার মতে, শুধু কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপনটুকুই সব নয়, তাই ভবিষ্যতে কেউ যদি চিত্রচোরের কোনও কমিক্স শেয়ার করতে চান, সেটা আমাদের জানিয়ে, পোস্টের মূল লিঙ্কটি শেয়ার করুন, কোনও অন্য লিঙ্ক বা শুধু ডাউনলোড লিঙ্ক শেয়ার করাটা অনুচিত। আশা করি, চিত্রচোরের বাকি পাঠকেরাও এই ধরনের কোনও পোস্ট অন্য কোনও স্থানে দেখে থাকলে আমাদের জানাবেন ও সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন ও এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবেন এটাই আশা করব। এই একই কারণে আগেও অনেকগুলি ব্লগ বন্ধ হয়ে গেছে, আমাদের সেরকম করুণ পরিণতি হোক, সেটা না চাইলে এই ঘটনাটা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিৎ।

০৮। এই ব্লগ কখনো বাণিজ্যিক করার কথা ভাবেননি কেন?

উঃ ভাবিনি সেটা ঠিক নয়। এতটা পরিশ্রম যখন আমরা সবাই মিলে করছি, তার প্রতিদান হিসেবে কিছু আশা করাটা কোনো গর্হিত কাজ নয়, তবে আমরা যে সমস্ত কমিক্স অনুবাদ করি, সেগুলোর কপিরাইট আমাদের নেই। ইউরোপিয়ান কমিক্স, জাপানিজ মাঙ্গা কমিক্স ইত্যাদি বহু কাজ ইংরেজিতে অবাণিজ্যিকভাবে অনুবাদ হয়েছে, সেগুলিকে “স্ক্যান্সেশান” (স্ক্যান+ট্রান্সলেশান) বলা হয়। তেমনি বিদেশের কমিক্স বা কমিক্স সিরিজগুলোকে নিজের মাতৃভাষায় আরও বেশি জনপ্রিয় (ও ভালো লাগলে) আসল কমিক্সটি কেনার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো ও বিশেষত সেই অসামান্য কমিক্সগুলির সম্মানার্থে চিত্রচোর নিষ্ঠার সাথে অবাণিজ্যিকভাবে কাজ করে চলেছে, তবুও আপনি কিছু সাহায্য করতে চাইলে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য কমিক্স স্ক্যান করে আমাদের দিতে পারেন অথবা নতুন কোনও কমিক্স অনুবাদ করে আমাদের দিতে পারেন, সেই বিষয়ে কথা বলতে ও বিস্তারিত জানতে আমাদের মেইল করুন।

ঠিকানা ও এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য এখানে পাবেন-

০৯। একেকটা অনুবাদ রূপান্তর করতে কি রকম সময় লাগে? অন্য কেউ কি আপনাদের হয়ে অনুবাদ করতে পারেন?

উঃ সেটা পুরোপুরি নির্ভর করে গল্প বা কমিক্স সিরিজটি কত বড় তার ওপরে। তবুও একটা কমিকসকে আদ্য-পান্ত বাংলায় রূপান্তর করতে গেলে অনুবাদের পাশাপাশি ছবিগুলোর ওপরের গ্রাফিক্স (Onomatopoeia) মুছে আবার বেশ কিছু রূপান্তর করতে হয়, সেটা আরও বেশি সময়সাপেক্ষ কাজ। গড়ে একটা ছোট কমিক্স অনুবাদ করতে যদি সপ্তাহ তিনেক সময় লাগে, আর দিনে যদি চার ঘণ্টা এর পেছনে ব্যয় করা হয় তবে সর্বমোট সময় দাঁড়াচ্ছে চুরাশি ঘণ্টা, কম বেশি করে ধরে নিলাম একটা সাধারণ কমিক্সের বাংলা সংস্করণ করতে সময় লাগছে সত্তর ঘণ্টা। তারপরে সেটার প্রুফ রিড এবং সম্পাদকের সময় এবং সেটির ভুলত্রুটি শোধরানোর জন্যও বেশ কিছু সময় যাচ্ছে। প্রতিবারেই আমাদের এই অতি তুচ্ছ কাজটাকে বিনামূল্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শুধু পাঠকদের কাছে একটাই অনুরোধ থাকে, তাদের মূল্যবান সময়ের মিনিট দু’য়েক সময় খরচ করে, ভালো-মন্দ মতামত জানিয়ে এবং কমিকসের অনুবাদের মান কেমন হচ্ছে তা জানিয়ে আমাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা যোগানো— তাহলে এখনো বলবেন কমেন্ট জরুরি নয়?

আমাদের হয়ে কেউ নিঃসন্দেহে অনুবাদ করতেই পারেন, সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আমাদের মেইল করুন।

১০। চিত্রচোরের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কি? বা এর ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে? ভবিষ্যতে আর কি কি অনুবাদ পাওয়া যাবে, সেটা যদি জানান!

উঃ চিত্রচোরের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো এই ব্লগের পাঠকেরা ও তাদের ভালোবাসা। আসল জীবনে আমি একটা চরম ইন্ট্রোভার্ট ছেলে, লোকজনের সঙ্গে যেচে আলাপ করতে পারি না, নিজেকে গুটিয়ে রাখি, কিন্তু এই ব্লগের সূত্রেই আমার বেশ কিছু গুণী মানুষের সাথে আলাপ হয়েছে, এবং প্রথম দিকে একা কাজ করলেও এখন অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাই আমরা এখন টিম হিসেবে কাজ করি। ভবিষ্যতে হয়তো এরকম আরও অনেকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন, এবং আমরা আরও ভালো ভালো কমিক্স আপনাদের উপহার দিতে পারব। এছাড়াও অনেক খারাপ মুহূর্তে বেশকিছু মূল্যবান মতামত ও উপদেশ (যেগুলো আমার কাছে মধুর স্মৃতির মতো, এবং অর্থের থেকেও বেশি মূল্যবান) নিজের দুঃখ ভুলে নিজের জীবনের পাশাপাশি এই কাজটাকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

এই বিষয়ে আরও কিছু জানার ইচ্ছে থাকলে জানাবেন, ভবিষ্যতে আমাদের টিম ও বন্ধুদের নিয়েও আলোচনা করা যেতেই পারে।

আর কি কি অনুবাদ ভবিষ্যতে পাবেন এটা বললেই চাপ খেয়ে যেতে পারি যে, “অমুক” অনুবাদ কবে পাব বা “তমুক” অনুবাদ পাচ্ছি না কেন, ইত্যাদি, আর সেটা বলে দিলে আমার পছন্দের বিষয় আপনাদের “চমক” দেওয়ার মজাটা হারিয়ে যাবে, তাই সেটা নাহয় আপাতত মুলতুবী রাখা থাক।

** ওপরের প্রশ্ন ও উত্তরগুলি কিছুক্ষেত্রে ইচ্ছে করেই ব্যাঙ্গাত্মকভাবে লেখা হয়েছে।

যাক, আজকে অনেকটা নিজের ঢাক পিটিয়ে নিলাম। যদিও সেই অর্থে এটাই প্রথম এই ধরনের “পার্সোনাল” কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম যেটা আগে করা হয়নি। ভালো লাগলে বা পাঠকেরা চাইলে অনুবাদের পদ্ধতি নিয়ে বা “আমাদের টিম” নিয়ে অনেক কিছু বলার আছে। আজকে এখানেই শেষ করছি। এবারে বোনের চতুর্থ পর্ব পড়ে ফেলুন।


গত এক পর্বে ডাউনলোড অপশন তুলে দেওয়ায় অনেকে আক্ষেপ করেছিলেন, তাদের কথা মাথায় রেখেই আবার ডাউনলোড অপশন চালু করা হলো। কমিক্সটি পড়ার পর আপনার মতামত একান্ত কাম্য।

অনুবাদ : ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল
প্রচ্ছদপট রূপান্তর ও বর্ণ সংস্থাপন : রূপক ঘোষ

আগামী পর্বে বোনেরা ফের ফিরবেন।

শুক্রবার, জুলাই ০৫, ২০১৯

পোস্ট #০৩৯ : গোয়েন্দা রিপ_"প্রজেক্ট: পুনরুদ্ধার" #০১_স্পেশাল পোস্ট


গোয়েন্দা রিপ কার্বি

প্রথমেই সবাইকে রথযাত্রার শুভেচ্ছা জানাই। আজকে পোস্টটা করতে অনেক দেরি হয়ে গেল, আদৌ পোস্ট করার সুযোগ যে আজকে পাব, সেটা ভেবে উঠতে পারিনি। যাই হোক, আজকে একটু স্বাদবদল করার জন্য অন্য কমিক্স এনেছি, সেই অর্থে আজকে চিত্রচোরে এটা স্পেশাল পোস্ট।

হেডিং দেখে কি ভ্রুকুঞ্চিত হয়েছে? “প্রজেক্ট পুনরুদ্ধার” সেটা কি? - একটু পরেই উত্তর পাবেন।

আশা করি রিপ কার্বির সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না, যারা ইন্দ্রজাল কমিক্স পড়েছেন বা আনন্দবাজার পত্রিকায় কমিক্স স্ট্রিপগুলো পড়েন, তারা "গোয়েন্দা রিপ" সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই জানেন।

যারা জানেন না তাদের জন্য আরও একবার...

রিপ কার্বির নেপথ্যের তারকারা :


স্রষ্টা আলেক্স রেমন্ড

রিপ কার্বির স্রষ্টা আমেরিকান কার্টুনিস্ট অ্যালেক্স রেমন্ড, যিনি ১৯৩৪ সালে কিং ফিচারস্‌ সিন্ডিকেটের হয়ে “ফ্ল্যাশ গর্ডন” কমিক্স সৃষ্টি করে বিশ্ববিখ্যাত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তিনি আর তাঁর আগের করা কিছু কমিক্স চরিত্র (ফ্ল্যাশ গর্ডন, জঙ্গল জিম, সিক্রেট এজেন্ট X-9) নিয়ে কাজ না করে এক প্রাক্তন নৌ-সেনা রিপ কার্বির কাজ শুরু করেন। রিপ ২য় বিশ্বযুদ্ধ থেকে ফিরে প্রাইভেট ডিটেকটিভ হিসেবে কাজ করা শুরু করেন। মাঝেমাঝে তাঁকে কাজে সাহায্য করতেন তার বান্ধবী ফ্যাশন মডেল জুডিথ “হনি” ডোরিয়ান (রেমন্ডের নিজের দেওয়া ও তিন মেয়ের ডাকনাম থেকে এই নামের উৎপত্তি) আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রিপের পরিচারক ডেসমন্ড।

সেই সময়ে কিং ফিচার্সের সম্পাদক ওয়ার্ড গ্রিন রেমন্ডকে একটা “ডিটেকটিভ-টাইপের” গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টি করার পরামর্শ দেন, যেটা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৪৬ সালের ৪ঠা মার্চ, সিন্ডিকেট বিভিন্ন পেইন্ট করা প্রমোশনাল আর্টের মাধ্যমে ব্যাপক হারে রিপের প্রমোশন করেছিল। স্ট্রিপটি খুব সফল হয়েছিল, আর এর জন্য ১৯৪৯ সালে রেমন্ড রুবেন অ্যাওয়ার্ড পান।

ভাবশিষ্য জন প্রেন্টিস

রেমন্ডের এই স্ট্রিপে কাজ করার সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গল্পগুলো লিখতেন ওয়ার্ড গ্রিন আর গ্রিনের মৃত্যুর পর ফ্রেড ডিকেন্স‌ন। বেশ কিছু সিকোয়েন্স অবশ্য রেমন্ড নিজেই লিখেছিলেন। ১৯৫৬ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় রেমন্ডের মৃত্যু হয়। কিং ফিচার্সের তখন একজনকে রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন আর জন প্রেন্টিসকে পেয়ে যান। ডিকেন্সন আশির দশকের মাঝ বরাবর শারীরিক অসুস্থতার কারণে অবসর নিতে বাধ্য হন। প্রেন্টিস তারপর আঁকা-লেখা সব নিজেই সামলাতেন, তিনি ১৯৯৯ সালে নিজের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রিপকে নিয়ে কাজ করে গেছেন। ১৯৯৯ সালের ২৬ শে জুন রিপ নিজে অবসর নেন। এই স্ট্রিপে কাজ করার জন্য প্রেন্টিস ন্যাশেনাল কার্টুনিস্টস্‌ সোসাইটি স্টোরি কমিক স্ট্রিপ অ্যাওয়ার্ড পান ১৯৬৬, ১৯৬৭ আর ১৯৮৬ সালে।

তখনকার কে.এফ.এস. এর সম্পাদক ওয়ার্ড গ্রীন 
সহকারী শিল্পী আল উইলিয়ামসন
সহকারি শিল্পী গ্রে মরো

রিপ প্রায় পাঁচ দশক টানা চলেছিল, আর জন প্রেন্টিস একাই চল্লিশ বছরের ওপরে রিপ নিয়ে কাজ করেছিলেন। প্রকাশনার এত বছরে অনেক লেখক ও শিল্পীরা সহকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন, তাদের মধ্যে ফ্রাঙ্ক বয়েল (যিনি শেষ গল্পটি সমাপ্ত করেন), আল উইলিয়ামসন আর গ্রে মরো।

এবার আমরা জেনে নিই "প্রজেক্টঃপুনরুদ্ধার" কি?


না, ঘাবড়ে যাবার কিছু নেই, এটা তেমন আহামরি বা মারাত্মক কিছু নয়। বিভিন্ন খবরের কাগজে ছোট ছোট কমিক্স একেকটা স্ট্রিপ থাকে যা সোম-শুক্র বা রবিবার এইরকম বিভিন্ন দিনে খবরের কাগজে প্রকাশিত হয়। যেমন আনন্দবাজারে এখন পাওয়া যায় অরণ্যদেব ও ম্যানড্রেক, আজকালে “মাকড়সার দুর্দান্ত কীর্তি” নামে স্পাইডার-ম্যান, বর্তমান পত্রিকায় টারজান ইত্যাদি। একসময় আনন্দবাজারে রিপ কার্বি প্রকাশিত হত, অমৃত পত্রিকায় একসময়ে মডেস্টি ব্লেজ বা আজকালে একসময় জেমস বন্ডের নিউজপেপার স্ট্রিপগুলো প্রকাশিত হত, আন্তর্জালে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা কিছু স্ট্রিপ যেগুলোর মান খুবই খারাপ সেগুলোকে পুনরুদ্ধার করে নতুন প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করে রাখাটাই আমাদের মূল লক্ষ্য হবে। এক্ষেত্রে আপনিও আপনার কাছে পুরনো কিছু স্ট্রিপ থাকলে তা আমাদের সাথে শেয়ার করে আপনার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন। অনেক ব্লগার বন্ধুরা একসঙ্গে এটিতে অবদান রাখবেন, অনেকটা “ইন্দ্রজালের প্রত্যাবর্তন” এর মতো। এ বিষয়ে এবারের সংস্করণের ভেতরে অনুবাদকের পাতায় আরও কিছু তথ্য দেওয়া থাকল।

হ্যাঁ, সেই গোয়েন্দা রিপ আজ হাজির হয়েছেন, চিত্রচোরে।

ইন্দ্রজাল বা আনন্দবাজারে কখনো অ্যালেক্স রেমন্ডের করা রিপ প্রকাশিত হয়নি, যা হয়েছে সব জন প্রেন্টিসের গল্পগুলো, তাই আজ বাংলায় প্রথমবার গোয়েন্দা রিপের প্রথম অনুসন্ধান “দ্য চিপ ফ্যারাডে মার্ডার” এর বঙ্গানুবাদ “দরজার সামনে খুন” শুধুমাত্র চিত্রচোরে।

রিপের প্রথম অনুসন্ধানের কাহিনি পড়তে নিচের ছবিতে ক্লিক করুন।

গত এক পর্বে ডাউনলোড অপশন তুলে দেওয়ায় অনেকে আক্ষেপ করেছিলেন, তাদের কথা মাথায় রেখেই আবার ডাউনলোড অপশন চালু করা হলো। কমিক্সটি পড়ার পর আপনার মতামত একান্ত কাম্য।

সম্পাদনা ও নামকরণ : ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল
প্রুফ সংশোধন : মোঃ আশিকুর রহমান
প্রচ্ছদপট রূপান্তর ও বর্ণ সংস্থাপন ও এডিট : রূপক ঘোষ

আগামী পর্বে বোনেরা ফের ফিরবেন...