মঙ্গলবার, মে ১৭, ২০১৬

পোস্ট #০০৪ : গলেরা এলেন চিত্রচোরে... অ্যাসটেরিক্স ও পিক্ট দল #০১


আমাদের সঙ্গে অ্যাসটেরিক্সের কথা হয়েছিলো গত সপ্তাহ দুয়েক আগে...অ্যাসটেরিক্স জানিয়েছিল তখনি আসবে আর চিত্রচোর থেকে ঘুরে যাবে। যাইহোক পরে ওদের পাঠানো পায়রার মাধ্যমে চিঠি পাই,তাতে অ্যাসটেরিক্স জানায় যে আচমকা রোমান আক্রমন ও এটাসেটামিক্সের শারীরিক অসুস্থতার কারনে ওনারা এখন আসতে পারছেন না,সপ্তাহ দুয়েক বাদে আসবেন। সেইমতো যে অ্যাসটেরিক্স ও ওবেলিক্স কথা রেখেছে, তাই তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।এখন কয়েক সপ্তাহ ওনারা আমাদের সঙ্গেই থাকবেন।

সে যাহোক এবার জেনে নেওয়া যাক অ্যাসটেরিক্সের গল্পের পেছনের কিছু ইতিহাস...



ইউদেরজো প্রথম যখন রেখাচিত্র অঙ্কন করেন তখন গল যোদ্ধাদের বৈশিষ্ট্য মোতাবেক অ্যাস্টেরিক্সকে বিশাল আকৃতির একজন শক্তিশালী যোদ্ধা হিসেবে চিত্রিত করেন। কিন্তু গোসিনির চিন্তাধারা ছিল অন্যরকম। তিনি অ্যাস্টেরিক্সকে একজন ক্ষুদ্রাকৃতির বুদ্ধিমান যোদ্ধা হিসেবে কল্পনা করেছিলেন, যে শক্তির চাইতে বুদ্ধিমত্তাকে বেশি ব্যবহার করবে। তথাপি, ইউদেরজো মনে করেছিলেন এরকম ক্ষুদ্রাকৃতির নায়কের প্রয়োজন একজন অনুজ্জ্বল কিন্তু শক্তিশালী সহচর। ধারনাটি গোসিনির কাছেও ভালো লেগেছিল। আর তাই জন্ম নিলো ওবেলিক্স।যদিও এসময় অ্যাস্টেরিক্সের জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছিল, কিন্তু অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে পিলটের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। এসময় পিলটকে জর্জ দারগো কিনে নেয়।
 


গোসিনির মৃত্যুর পর পাঠকদের অনুরোধে ইউদেরজো নিজেই কাহিনীর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে শুরু করেন। কিন্তু কমিকটির প্রকাশনা কিছুটা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এই কাহিনীর বেশির ভাগ সমালোচক এবং ভক্তরা গোসিনির লেখাকেই পছন্দ করত। ইউদেরজো এসময় লে এডিশন Albert-René নামে নিজের একটি প্রকাশনা সংস্থা খোলেন। সেখান থেকে পরবর্তীতে ইউদেরজো নিজের লেখা এবং অঙ্কিত বইগুলি ছাপানো হয়। যদিও,দারগো, সর্বপ্রথম কাহিনীগুলোর প্রকাশক, তারা
প্রথম ২৪টি কাহিনী যার লেখক ইউদেরজো এবং গোসিনি দু’জনেই, সেগুলো প্রকাশের স্বত্ব রেখে দিয়েছিল। ১৯৯০ সালে লেখকদ্বয়ের পরিবার স্বত্ব ফেরত পাবার জন্য দারগদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৮ সালে দীর্ঘস্থায়ী এক মামলার পর দারগদ কাহিনীগুলো প্রকাশ এবং বিক্রি করবার অধিকার হারিয়ে ফেলে। ইউদেরজো পরবর্তীতে আলবার্ট-রেন এর পরিবর্তে হ্যাচেটের কাছে স্বত্ব বিক্রয় করে দিলেও নতুন কাহিনী প্রকাশনার স্বত্ব আলবেয়ার ইউদেরজো (৪০%), সিলভিয়া ইউদেরজো (২০%) এবং অ্যান গোসিনি (৪০%) কাছেই রয়ে যায়।
যদিও ইউদেরজো প্রথমে ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁর মৃত্যুর পরে এর আর কোন নতুন কাহিনী লেখা হবে না, যে ধরনের অনুরোধ হার্জ করে যান তার বিখ্যাত টিনটিনের অভিযান সম্পর্কে, কিন্তু ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে হ্যাচেটের কাছে তার অংশ বিক্রয় (যারা তার কম্পানি অধিগ্রহণের মাধ্যমে কমিক্সের স্বত্বের মালিকানা লাভ করেছে) করার পর তার মনোভাবের পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে দু’পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় ।
লে মণ্ডের কাছে লেখা এক চিঠির মাধ্যমে ইউদেরজো নিজের মেয়ে সিলভিয়া তার বাবার পারিবারিক প্রকাশনা কেন্দ্র বিক্রয় এবং তার মৃত্যুর পরেও অ্যাস্টেরিক্সের কাহিনী বের করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়েছেন। তিনি লিখছেন, “...অ্যাস্টেরিক্সের সহলেখক, গল যোদ্ধাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে আজ যোগ দিয়েছে রোমানদের সাথে- যারা শুধু কলকারখানা আর পয়সা বোঝে।” অ্যানে গোসিনি অবশ্য তার স্বত্ব একই সময়ে বিক্রয় এবং নতুন প্রকাশনা চালিয়ে যাবার অনুমতি দেন। কয়েকমাসের মধ্যেই ইউদেরজো নতুন কাহিনী রচনার কাজে তিনজন অঙ্কনশিল্পী, যারা তার সাথে অনেক দিন ধরে কাজ করেছিল তাদেরকে নিয়োগ দেন।


আজ আমরা যে গল্পটা পড়তে চলেছি সেটাই সর্বপ্রথম প্রকাশিত গল্প যাতে আসল স্রষ্টারা কাজ করেন নি। এই নতুন অভিযানে নতুন টিমের হাতে ইউদেরজো দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন ও তিনি অবসর নিয়েছেন। এই নতুন অ্যালবামে গল্প লিখেছেন ইভ্যেস ফের্‌রী ও ছবি এঁকেছেন দিদিয়ার কনর‍্যাড২০১৩ সালে প্রকাশিত হয় তাদের লেখা এই প্রথম গল্প "অ্যাসটেরিক্স এন্ড দ্য পিক্টস" ।আজ আমরা পরবো সেই "অ্যাসটেরিক্স এন্ড দ্য পিক্টস" এর অনুবাদ "অ্যাসটেরিক্স ও পিক্ট দল"।


* সমস্ত তথ্যসূত্র উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। 
** প্রথম ও দ্বিতীয় ছবিটি অ্যাসটেরিক্স এন্ড দ্য পিক্টস এর ইংরাজি ও বাংলা সংস্করণ এর ছবি।
তৃতীয় ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে বাদিক থেকে প্রথম দুজন গোসিনি ও ইউদেরজো অ্যাসটেরিক্স ও ওবেলিক্স এর স্রষ্টা ও শেষ দুজন বর্তমান চিত্রশিল্পী ও লেখক যথাক্রমে কনর‍্যাড ও ফের্‌রী।

শেষ ছবিতে কনর‍্যাড ও ফের্‌রী তাদের প্রথম অ্যালবাম অ্যাসটেরিক্স এন্ড দ্য পিক্টস হাতে নিয়ে ছবি তুলেছেন।

আজ পড়ুন অ্যাসটেরিক্স ও পিক্ট দল এর প্রথম পর্ব শুধু মাত্র চিত্রচোর ব্লগে-



বিদ্রঃ এই কমিক্স অ্যালবামটি সব বয়সের পাঠকদের পড়ার উপযোগী।তাই নির্দ্বিধায় পড়ুন ও পড়ান। আর অনুবাদ কেমন হচ্ছে জানাতে ভুলবেন না যেন।


ডাউনলোড করুন

আগামী সপ্তাহে অ্যাসটেরিক্স ও পিক্ট দল এর দ্বিতীয় পর্ব পড়তে চোখ রাখুন শুধুমাত্র চিত্রচোর ব্লগে...

 




বাংলায় অনুবাদ ও প্রচ্ছদপট রূপায়নঃ রূপক ঘোষ।



৭টি মন্তব্য:

  1. আবার চমক।। ভাই জয় হোক তোমার ।। ধন্যবাদ দিয়ে বকা খেতে চাই না ।। 👌😊💃

    উত্তরমুছুন
  2. রোজকার একঘেয়ে জীবনে মাঝেমাঝে চমক এলে বেশ ভালোই লাগে,তাই আমি বরাবরি একটু চমকাতে ভালোবাসি !!! :)

    উত্তরমুছুন